যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে রাশিয়ার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান বেড়ে যাওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং এর প্রতিক্রিয়ায় এমন পদক্ষেপ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
হোয়াইট হাউজের ঘনিষ্ঠ সূত্রগুলো জানাচ্ছে, গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই মস্কোর উপর নতুন করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার বিভিন্ন প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সেগুলোতে অনুমোদন দেননি।
সম্প্রতি ইউক্রেনে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর ট্রাম্প রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, তিনি অবশ্যই নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করবেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘তিনি অনেক মানুষকে হত্যা করছেন। আমি জানি না তার কি হয়েছে।’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, অতীতে ইউক্রেনে রাশিয়ার কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্রাম্প অনেক সময় পিছিয়ে এসেছেন। এমন পরিস্থিতিতে তিনি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা থেকে বিরত থাকতেও পারেন।
ট্রাম্পের আশঙ্কা, নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে রাশিয়া শান্তি আলোচনার পথ থেকে সরে আসতে পারে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও গত সপ্তাহে সিনেট পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটিকে জানান, ট্রাম্পের ধারণা হলো, এখনই যদি নিষেধাজ্ঞার হুমকি দেওয়া হয়, তাহলে রাশিয়া আলোচনা বন্ধ করে দেবে। তাদের সঙ্গে কথা বলার এবং আলোচনার টেবিলে আনতে পারাটা গুরুত্বপূর্ণ।
যদিও আলোচনার ফল পাওয়া যাবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়।
অন্যদিকে, ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ আশা প্রকাশ করেছেন যে ট্রাম্প তার অবস্থান পরিবর্তন করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বুঝতে পেরেছেন যে প্রেসিডেন্ট পুতিন যখন ফোনে শান্তির কথা বলেন বা তার দূতদের শান্তির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন, তখন তিনি মিথ্যা বলছেন।
আমরা দেখেছি, ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তার অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আমি শুধু আশা করি, এটি এবার কাজে পরিণত হবে।’
কিছু রিপাবলিকান সদস্যও রাশিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ট্রাম্পকে উৎসাহিত করছেন।
সাউথ ক্যারোলিনার সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম একটি বিল উত্থাপন করেছেন, যেখানে রাশিয়ার তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস বা ইউরেনিয়াম কেনা দেশগুলোর থেকে আমদানি করা পণ্যের উপর ৫০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।
আগে ট্রাম্প রাশিয়ার ব্যাংকিং খাত এবং রুশ জ্বালানি পণ্য ক্রেতাদের উপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। যদিও ইউক্রেনে রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষাপটে ট্রাম্প কী পদক্ষেপ নিবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষকরা মনে করেন, ইউক্রেন সংকট বিশ্ব অর্থনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে গভীর প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে জ্বালানি বাজারের অস্থিরতা এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিশ্ব অর্থনীতির যেকোনো পরিবর্তন তাদের উপর সরাসরি প্রভাব ফেলে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন