ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে তেলের বাজারে আগুন! শেয়ারবাজারে ধস, উদ্বেগে বিশ্ব

বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে মিশ্র প্রভাব, অপরিশোধিত তেলের দামে উল্লম্ফন।

আন্তর্জাতিক বাজারে বৃহস্পতিবার তেলের দামে বড় ধরনের উল্লম্ফন দেখা গেছে। একইসাথে, বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারগুলোতে মিশ্র প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প রাশিয়ার তেল কোম্পানিগুলোর উপর নিষেধাজ্ঞা জারী করার ফলস্বরূপ তেলের বাজারে এই অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে। খবর সূত্রে জানা যায়, ব্রেন্ট ক্রুডের দাম বেড়েছে ২.৮৫ ডলার, যা প্রতি ব্যারেল প্রতি ৬৫.৪৪ ডলারে পৌঁছেছে।

অন্যদিকে, মার্কিন বেঞ্চমার্ক ক্রুড অয়েলের দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬১.২১ ডলার, যা বৃদ্ধি পেয়েছে ২.৭০ ডলার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে আলোচনার টেবিলে আনতে বাধ্য করা। একইসাথে, ইউক্রেনকে সহায়তার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) রাশিয়ার জব্দ করা সম্পদ ব্যবহার করার পরিকল্পনা করছে, যা আগামী অন্তত দুই বছর ধরে ইউক্রেনের অর্থনীতিকে সহায়তা করবে।

শেয়ার বাজারের চিত্র পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ইউরোপের বাজারেও মিশ্র প্রভাব বিদ্যমান। জার্মানির ডিএএক্স সূচক ০.৩ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ২৪,০৮৩.৮৯-এ।

ব্রিটেনের এফটিএসই ১০০ সূচক ০.১ শতাংশ বেড়ে ৯,৫২৭.৩৩-এ পৌঁছেছে, তবে প্যারিসের সিএসি ৪০ সূচক ০.৪ শতাংশ বেড়ে ৮,২৩৮.৪৭-এ দাঁড়িয়েছে।

অন্যদিকে, চীন এবং হংকংয়ের শেয়ার বাজারে কিছুটা উত্থান দেখা গেছে। বেইজিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ কমিউনিস্ট পার্টির বৈঠকের কারণে চীনের শেয়ার বাজার ইতিবাচক ছিল। হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক ০.৭ শতাংশ বেড়ে ২৫,৯৬৭.৯৮-এ এবং সাংহাই কম্পোজিট সূচক ০.২ শতাংশ বেড়ে ৩,৯২২.৪১-এ পৌঁছেছে।

তবে, জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ১.৪ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৪৮,৬৪১.৬১-এ। জাপানের প্রধানমন্ত্রী সানায়ে তাকাইচি গত বছরের চেয়ে বড় আকারের প্রায় ১৪ ট্রিলিয়ন ইয়েনের (প্রায় ৯২ বিলিয়ন ডলার) একটি প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।

জাপানি ইয়েনের দুর্বলতার কারণে মার্কিন ডলারের মূল্য বেড়েছে। বৃহস্পতিবার প্রতি ডলারের বিনিময় হার ১৫২.৫৯ ইয়েনে পৌঁছেছে, যা আগের দিন ছিল ১৫১.৯৪ ইয়েন।

দক্ষিণ কোরিয়ার কোস্পি সূচক ১ শতাংশ কমে ৩,৮৪৫.৫৬-এ দাঁড়িয়েছে। বিনিয়োগকারীরা যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে বাণিজ্য আলোচনায় তেমন অগ্রগতি না হওয়ায় কিছুটা সতর্ক ছিলেন।

অস্ট্রেলিয়ার এসএন্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচক সামান্য বেড়েছে, যেখানে তাইওয়ানের তাইএক্স সূচক ০.৪ শতাংশ এবং ভারতের বিএসই সেনসেক্স ০.৬ শতাংশ বেড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে, তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে আমদানি ব্যয় বাড়তে পারে, যা দেশের মূল্যস্ফীতিকে আরও বাড়িয়ে দিতে পারে।

তাই, বিশ্ব বাজারের এই পরিবর্তনের দিকে বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদদের সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *