শিরোনাম: ট্রাম্পের স্কটল্যান্ড সফর: বিতর্কিত প্রেসিডেন্টের অবকাশ?
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের স্কটল্যান্ড সফর ঘিরে নতুন করে বিতর্ক দানা বেঁধেছে। অনেকে প্রশ্ন তুলছেন, এই সফর কি নিছক একটি অবকাশ, নাকি এর পেছনে রয়েছে অন্য কোনো উদ্দেশ্য?
ট্রাম্পের এই ভ্রমণ অতীতের মার্কিন প্রেসিডেন্টদের অবকাশ যাপনের ধারা থেকে বেশ ভিন্ন, যা নিয়ে আলোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে।
সাধারণত, মার্কিন প্রেসিডেন্টরা অবকাশ কাটানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেই বিভিন্ন স্থান বেছে নেন। যেমন, আব্রাহাম লিঙ্কন গ্রীষ্মের সময় হোয়াইট হাউসের কাছেই একটি কুটিরে বিশ্রাম নিতেন।
আবার, ইউলিসিস এস. গ্রান্ট নিউ জার্সির সমুদ্র সৈকতে সময় কাটাতেন। এমনকি, রোনাল্ড রেগানও ক্যালিফোর্নিয়ার একটি স্থানে ছুটি কাটানোর সময় তাঁর সেরা চিন্তাগুলো করতেন বলে জানা যায়।
কিন্তু ট্রাম্পের স্কটল্যান্ড যাত্রা একেবারেই ভিন্ন। তিনি সেখানে তাঁর মালিকানাধীন গলফ কোর্সগুলোতে গিয়েছেন, যা তাঁর পারিবারিক ব্যবসার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।
এই সফরে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেবেন এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানা গেছে। একইসঙ্গে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রধান উরসুলা ভন ডের লেয়েন এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে তাঁর বাণিজ্য বিষয়ক বৈঠকেরও কথা রয়েছে।
ট্রাম্পের এই সফরকে অনেকে তাঁর ব্যবসার প্রসারের একটি কৌশল হিসেবে দেখছেন। আমেরিকান ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লিওনার্ড স্টেইনহর্ন মনে করেন, “ট্রাম্প তাঁর প্রেসিডেন্সিকে নিজের ব্যবসার প্রসারের জন্য কাজে লাগাচ্ছেন। এই ক্ষেত্রে, তিনি তাঁর গলফ কোর্সগুলোর প্রচারের জন্য এই ভ্রমণকে একটি সুযোগ হিসেবে দেখছেন।”
অতীতে, মার্কিন প্রেসিডেন্টদের অবকাশ যাপনের ধরন ছিল ভিন্ন। ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট প্রায়ই বাহামাসে মাছ ধরতে যেতেন। হ্যারি এস. ট্রুম্যান ফ্লোরিডার কী ওয়েস্টকে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন।
বারাক ওবামা এবং বিল ক্লিনটন ম্যাসাচুসেটস-এর মার্থা’স ভিনিয়ার্ডে ছুটি কাটিয়েছিলেন, যা পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়িয়েছিল।
ট্রাম্প অবশ্য এর আগে অবকাশ যাপনের ধারণার তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। তাঁর মতে, “vacation” নেওয়ার কোনো মানে নেই। যদি কেউ কাজ উপভোগ না করেন, তবে তাঁর সেই কাজ করা উচিত নয়।
এমনকি, তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনী প্রচারের সময় হোয়াইট হাউস থেকে খুব কমই বের হবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই সফর তাঁর ব্যক্তিগত স্বার্থ এবং নৈতিকতার প্রশ্নে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। তাঁদের মতে, একজন প্রেসিডেন্টের এ ধরনের পদক্ষেপ ক্ষমতার অপব্যবহারের শামিল হতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস