যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। রক্ষণশীল বিভিন্ন মহলের সমর্থনপুষ্ট একটি সংগঠন এই মামলাটি করেছে, যা আন্তর্জাতিক বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
খবরটি বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে, কারণ শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে।
মামলাটি করেছে ‘নিউ সিভিল লিবার্টিজ অ্যালায়েন্স’ নামক একটি সংগঠন। তাদের প্রধান অভিযোগ হলো, ট্রাম্প আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (IEEPA) ব্যবহার করে এই শুল্ক আরোপ করেছেন, যা বেআইনি।
এই আইনের মাধ্যমে সাধারণত জরুরি পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সংগঠনটির মতে, শুল্ক আরোপের মতো সিদ্ধান্তের ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই, বরং তা কংগ্রেসের হাতে ন্যস্ত।
মামলার সঙ্গে যুক্ত একটি বিষয় হলো, ট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে মাদক পাচার বন্ধের কথা বলেছিলেন। কিন্তু আইনজীবীরা বলছেন, এর সঙ্গে শুল্কের কোনো সম্পর্ক নেই।
তাদের মতে, ট্রাম্প আসলে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং রাজস্ব বাড়াতে চেয়েছিলেন।
এই মামলাটি এমন এক সময়ে দায়ের করা হলো, যখন ট্রাম্পের শুল্ক নীতির বিরুদ্ধে ভিন্নমত দেখা যাচ্ছে। এমনকি রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যও এর বিরোধিতা করছেন।
কয়েকজন সিনেটর কানাডার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক প্রত্যাহারের জন্য ডেমোক্রেটিক পার্টির একটি প্রস্তাব সমর্থন করেছেন। এই পদক্ষেপের কারণে ট্রাম্পের দলের মধ্যে বিভেদ আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনপ্রণেতারাও এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। আইওয়া অঙ্গরাজ্যের সিনেটর চাক গ্রাসলি এবং ওয়াশিংটনের মারিয়া কান্টওয়েল একটি বিল এনেছেন, যেখানে শুল্ক আরোপ বা বাড়ানোর ক্ষেত্রে কংগ্রেসের অনুমোদন বাধ্যতামূলক করার কথা বলা হয়েছে।
তবে, হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, ট্রাম্প এই বিলের বিরোধিতা করবেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই মামলা এবং শুল্ক নীতির বিরোধিতার কারণে ট্রাম্পের ক্ষমতা কমে যেতে পারে। এটি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করতে পারে, যা বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য উদ্বেগের কারণ।
কারণ, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তন বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক নীতিকে প্রভাবিত করতে পারে। বিশেষ করে তৈরি পোশাকের মতো রপ্তানিমুখী শিল্প এবং আমদানি-নির্ভর পণ্যের বাজারে এর প্রভাব পড়তে পারে।
তাই, এই মামলার রায় এবং এর পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান