ট্রাম্পের নিরাপত্তা বিষয়ক আলোচনা: সিগন্যাল অ্যাপ নিয়ে বিতর্ক
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের একটি গোপন চ্যাট গ্রুপের ভুলবশত এক সাংবাদিককে যুক্ত করার ঘটনা নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
এই ঘটনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল ‘সিগন্যাল’ নামের একটি এনক্রিপ্টেড চ্যাট অ্যাপ্লিকেশন, যা নিয়ে ট্রাম্পের ভালো ধারণা ছিল না। খবরটি প্রকাশ্যে আসার পর নিজের অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিনি।
জানা গেছে, ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, প্রতিরক্ষামন্ত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং চিফ অব স্টাফসহ শীর্ষ কর্মকর্তারা ইয়েমেনে সামরিক হামলা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই অ্যাপ ব্যবহার করতেন। কিন্তু আটলান্টিক ম্যাগাজিনের এক সাংবাদিক অপ্রত্যাশিতভাবে সেই গ্রুপে যুক্ত হয়ে যান।
ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার পরে তিনি জানতে পারেন যে, তাঁর টিমের সদস্যরা অত্যন্ত সংবেদনশীল তথ্য আদান-প্রদানের জন্য এই অ্যাপ ব্যবহার করছিলেন। তিনি বিষয়টি ভালোভাবে বুঝতে পারেননি এবং তাঁর সহযোগীদের কাছে জানতে চান, ঠিক কী ঘটেছিল।
পরে অবশ্য ট্রাম্প এই ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করতে শুরু করেন। প্রথমে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং এটিকে ‘ছোটখাটো ভুল’ হিসেবে উল্লেখ করেন। কিন্তু পরে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইক ওয়াল্টজের দিকে ইঙ্গিত করেন তিনি।
ঘটনাটি ট্রাম্পের কাছে অপ্রত্যাশিত ছিল, কারণ তিনি মনে করেন তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের শুরুতে এটি একটি বড় ধরনের ‘বিচ্যুতি’ ঘটিয়েছে। তিনি সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে বলেন, যদি তাঁর কথা শোনা হতো, তাহলে সবার জন্য একটি সুরক্ষিত কক্ষ তৈরি করা হতো, যেখানে নেতৃত্ব এবং গোপনীয়তা বজায় রাখা যেত।
হোয়াইট হাউসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ফোনে এই সিগন্যাল অ্যাপটি নেই। ভবিষ্যতে কীভাবে এই ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করা হবে, সে বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই ঘটনার পর অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। রিপাবলিকান সিনেটর কেভিন ক্রেমার বলেছেন, এই ভুলের জন্য কাউকে না কাউকে অবশ্যই দায় নিতে হবে। অন্যদিকে, বারস্টুল স্পোর্টসের প্রতিষ্ঠাতা ডেভ পোর্টনয় বলেন, এর ফলস্বরূপ কাউকে পদত্যাগ করতে হতে পারে।
অন্যদিকে, ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভেন্সের মতে, এই চ্যাট থেকে ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের মধ্যে কীভাবে বিভিন্ন বার্তা দেওয়া যায়, সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনি আরো জানান, এই ঘটনার মাধ্যমে হোয়াইট হাউসের অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের দুর্বলতা প্রকাশ পেয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে এখনো তদন্ত চলছে। তবে, প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিটার হেগসেথের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে, কারণ তিনি হামলার বিস্তারিত তথ্যসহ একটি বার্তা পাঠিয়েছিলেন, যা অত্যন্ত গোপনীয় হিসেবে বিবেচিত হয়।
বর্তমানে, বিষয়টি নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা চলছে এবং অনেকেই এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন