যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা, মাইকেল ওয়াল্টজ-এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ উঠেছে, তিনি একটি এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ্লিকেশন, ‘সিগন্যাল’-এর মাধ্যমে ইয়েমেনে বিমান হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস করেছেন।
বিষয়টি নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে এবং অনেকে একে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে দেখছেন।
জানা গেছে, গত ১১ই মার্চ, ওয়াল্টজ ‘দি আটলান্টিক’ ম্যাগাজিনের সম্পাদক-এর প্রধান জেফরি গোল্ডবার্গকে সিগন্যালে যুক্ত করার জন্য একটি অনুরোধ পাঠান। গোল্ডবার্গকে এরপরে একটি চ্যাট গ্রুপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যেখানে ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে হামলার বিস্তারিত পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
তবে, ট্রাম্প এই ঘটনাকে তেমন গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বিষয়টিকে ‘গত দুই মাসের মধ্যে হওয়া একমাত্র ত্রুটি’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এনবিসি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, ‘মাইকেল ওয়াল্টজ একটি শিক্ষা পেয়েছেন এবং তিনি একজন ভালো মানুষ।’
এই ঘটনার জেরে ডেমোক্র্যাটরা অবিলম্বে ঘটনার তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যও এই বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
নেব্রাস্কার রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান ডন বেকন সিএনএন-কে বলেছেন, এটি একটি ‘মারাত্মক ভুল’ এবং এর কোনো ক্ষমা নেই। তিনি আরও বলেন, ‘তারা ইচ্ছাকৃতভাবে অত্যন্ত গোপনীয় তথ্য একটি অনিরাপদ ডিভাইসে রেখেছিল।
আমি যদি এমনটা করতাম, তাহলে আমার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল হয়ে যেত।’ বেকনের মতে, রাশিয়া ও চীন সম্ভবত এই তথ্যগুলো জেনে গেছে।
অন্যদিকে, রিপাবলিকান কংগ্রেসম্যান নিক লালোটা বিষয়টিকে ‘অত্যন্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে মন্তব্য করেছেন।
তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে এই অভিযোগগুলো অস্বীকার করা হয়েছে। প্রতিরক্ষা সচিব, পিট হেগসেথ, এক বিবৃতিতে গোল্ডবার্গকে ‘আবর্জনা সরবরাহকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
গোল্ডবার্গ এর প্রতিক্রিয়ায় বলেন, ‘আমি আগে এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ দেখিনি।’
এই ঘটনার জেরে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, গুরুত্বপূর্ণ সামরিক তথ্যের এমন প্রকাশ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনার জন্য সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানির প্রস্তুতি চলছে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান