আতঙ্ক! আপনার ফ্রিজ-ওয়াশিং মেশিনের দামে কি চরম আঘাত হানতে চলেছে?

ট্রাম্পের ইস্পাত শুল্ক: আপনার ফ্রিজ ও ডিশওয়াশারের দাম কি বাড়বে?

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ইস্পাতের ওপর আরোপিত শুল্ক নতুন করে প্রসারিত হতে যাচ্ছে। এবার এই শুল্কের আওতায় আনা হচ্ছে রেফ্রিজারেটর, ডিশওয়াশারসহ বিভিন্ন গৃহস্থালি সরঞ্জামকে।

এর ফলে এই পণ্যগুলোর দাম বাড়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, যা বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য এবং ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে।

মার্কিন বাণিজ্য দপ্তর জানিয়েছে, সম্প্রতি বৃদ্ধি করা ইস্পাত শুল্ক এখন থেকে ইস্পাত দিয়ে তৈরি গৃহস্থালি সরঞ্জামগুলির ওপরও কার্যকর হবে। আগামী ২৩শে জুন থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর করা হবে, যেখানে এই ধরনের পণ্যের ওপর তাদের ব্যবহৃত ইস্পাতের পরিমাণের ভিত্তিতে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হবে।

এর ফলে ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, ডিশওয়াশার, ওভেন, এবং অন্যান্য ইলেক্ট্রনিক পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির মূল উদ্দেশ্য ছিল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইস্পাত শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া। তাঁর যুক্তি ছিল, এর ফলে বিদেশি প্রতিযোগীতা কমে যাবে এবং আমেরিকার উৎপাদকরা সুবিধা পাবে।

তবে, এই ধরনের শুল্কের কারণে কিছু আমেরিকান প্রস্তুতকারকের উৎপাদন খরচ বেড়েছে, কারণ তাদের প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রাংশ আমদানি করতে হয়, যা শুল্কের কারণে আরও ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে।

অতীতেও দেখা গেছে, ট্রাম্পের আমলে ইস্পাত শুল্কের কারণে কিছু আমেরিকান প্রস্তুতকারক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৮ সালে ওয়াশিং মেশিনের ওপর শুল্ক আরোপের ফলে, আমেরিকান প্রস্তুতকারক হুইরপুল (Whirlpool) শুরুতে এর সমর্থন জানালেও, পরে ইস্পাত শুল্কের কারণে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়।

ফেডারেল রিজার্ভ এবং শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণা অনুযায়ী, এর ফলে একটি সাধারণ ওয়াশিং মেশিনের দাম প্রায় $90 (৯,০০০ টাকার বেশি) বেড়েছিল এবং মাত্র ১,৮০০ নতুন আমেরিকান কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছিল।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের শুল্ক নীতি একদিকে যেমন কিছু স্থানীয় শিল্পের জন্য সুরক্ষা দেয়, তেমনই তা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারে।

এর ফলে, আমদানি-নির্ভর দেশগুলোতে পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং সরবরাহ শৃঙ্খলে জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে।

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতেও এর প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে যদি তারা ইস্পাত বা সংশ্লিষ্ট পণ্য আমদানি করে।

এই পরিস্থিতিতে, ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি এবং ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব কেমন হবে, তা এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *