ট্রাম্পের আমলে শেয়ার বাজারের ভয়াবহ পতন! ৫০ বছরে এমন হয়নি

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজারে অস্থিরতা: বাংলাদেশের জন্য এর অর্থ কী?

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ১০০ দিনে বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। ১৯৭৪ সালের পর, কোনো প্রেসিডেন্টের মেয়াদের শুরুতে বাজারের এমন খারাপ অবস্থা দেখা যায়নি। একদিকে শুল্কনীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা, অন্যদিকে বিশ্ব অর্থনীতির দুর্বল চিত্র— সব মিলিয়ে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ। এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের জন্য এর সম্ভাব্য প্রভাবগুলো কী, তা নিয়ে আলোচনা করা হলো।

শেয়ার বাজারের এই পতনের পেছনে প্রধান কারণ হলো ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতি। শুল্কের সিদ্ধান্তগুলো বাজারের জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর ফলে বিনিয়োগকারীরা ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ থেকে দূরে থাকতে চাইছে এবং নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছে। এর ফলস্বরূপ, প্রযুক্তি খাতের শেয়ারগুলো উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অ্যাপল, এনভিদিয়া এবং টেসলার মতো বড় প্রযুক্তি কোম্পানির শেয়ারের দর কমেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাজারের এই অস্থিরতার মূল কারণ হলো নীতিগত সিদ্ধান্তগুলোর প্রভাব। যদিও বাজারের উত্থান-পতন অব্যাহত রয়েছে, তবে শুল্কনীতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত এই অস্থিরতা কাটানো কঠিন।

মার্কিন শেয়ার বাজারের এই টালমাটাল অবস্থার একটি বড় প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব অর্থনীতিতে। এর কারণ, মার্কিন ডলারের দুর্বলতা। ডলারের দর পতনের কারণে অনেক বিনিয়োগকারী তাদের বিনিয়োগের কৌশল পরিবর্তন করতে পারে। এর ফলে বাংলাদেশের আমদানি ব্যয় বাড়তে পারে, যা সরাসরি আমাদের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করবে।

এছাড়াও, বিশ্ববাজারে সোনার দাম বেড়ে যাওয়াটাও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিনিয়োগকারীরা যখন ঝুঁকি এড়াতে চায়, তখন তারা সোনায় বিনিয়োগ করে। এই প্রবণতা চলতে থাকলে, বিশ্ববাজারে সোনার দাম আরও বাড়তে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, বাংলাদেশের বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আন্তর্জাতিক বাজারের অস্থিরতা বিবেচনা করে, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আরও বেশি সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে, বিদেশি বাজারের শেয়ার বা বন্ডে বিনিয়োগের আগে ভালোভাবে সবকিছু যাচাই করা উচিত।

অন্যদিকে, বাংলাদেশের শেয়ার বাজারও (ডিএসই) কিছুটা প্রভাবিত হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের নেতিবাচক প্রভাব, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে পারে। তবে, ডিএসইতে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা এবং বিনিয়োগকারীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

সবশেষে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের এই পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য একটি সতর্কবার্তা। আমাদের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল রাখতে, বৈদেশিক বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে একটি সুচিন্তিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা দরকার।

তথ্য সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *