যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সিরিয়ার নতুন সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বুধবার সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে উপসাগরীয় সহযোগিতা পরিষদের (জিসিসি) নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই ঘোষণা দেন।
এই বৈঠকেই সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারার সঙ্গে ট্রাম্পের সাক্ষাৎ হয়, যা গত ২৫ বছরে দুই দেশের মধ্যে হওয়া প্রথম শীর্ষ বৈঠক।
বৈঠকে ট্রাম্প জানান, যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার ওপর থেকে সব নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে যাচ্ছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে সিরিয়া নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে বলে তিনি মনে করেন।
ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর আরব বিশ্বের নেতারা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এবং সিরিয়ার বিভিন্ন শহরে আনন্দ মিছিল হয়েছে।
বৈঠকে ট্রাম্প সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের বিষয়ে আলোচনা করেছেন। খুব শীঘ্রই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি তুরস্কের মাটিতে বৈঠকে বসবেন।
এই বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক আরো জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হোয়াইট হাউস থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, বৈঠকে ট্রাম্প আল-শারার কাছে ফিলিস্তিনি ‘সন্ত্রাসীদের’ বিতাড়ন, ইসরায়েলের সঙ্গে আব্রাহাম চুক্তিতে স্বাক্ষর এবং উত্তর-পূর্ব সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বন্দীশিবিরগুলোর দায়িত্ব নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করেছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ সিরিয়ার নতুন সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি বাড়াতে সহায়ক হবে। এর ফলে জিসিসিভুক্ত দেশগুলো সিরিয়াকে আরও বেশি আর্থিক সহায়তা দিতে পারে।
উল্লেখ্য, এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কারণে তারা সরাসরি বিনিয়োগ করতে দ্বিধা বোধ করত।
ট্রাম্পের এই সফরকালে ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়েও আলোচনা হয়েছে। সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে সম্মত হয়েছে এবং দেশটি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কেনার চুক্তি করেছে।
ট্রাম্পের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসাবে দেখা যাচ্ছে।
তথ্যসূত্র: আল জাজিরা