ডিসি পুলিশের নিয়ন্ত্রণ: ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তে তোলপাড়!

যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসির পুলিশ বিভাগের উপর সরাসরি ফেডারেল নিয়ন্ত্রণ ঘোষণা করেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসঙ্গে, শহরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি মোকাবিলায় ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েন করারও নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।

গত সোমবার এক বিবৃতিতে ট্রাম্প এই ঘোষণা দেন। খবর অনুযায়ী, সাবেক এক সরকারি কর্মীর ওপর হামলার ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে, ওয়াশিংটন ডিসিতে অপরাধের ক্রমবর্ধমান হার। যদিও সরকারি তথ্য বলছে ভিন্ন কথা।

২০২৩ সালের তুলনায় ২০২৪ সালে সহিংস অপরাধের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এমনকি চলতি বছরেও অপরাধের হার নিম্নমুখী।

হোম রুল অ্যাক্ট, ১৯৭৩-এর অধীনে প্রেসিডেন্টের এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে রাজধানীর স্থানীয় সরকার এবং ফেডারেল সরকারের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করা হয়।

জরুরি পরিস্থিতিতে, প্রেসিডেন্টকে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টার জন্য পুলিশ বিভাগের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার অনুমতি দেয় এই আইন। তবে, এই সময়সীমা বাড়াতে হলে কংগ্রেসকে অবহিত করতে হবে অথবা আইনের পরিবর্তন আনতে হবে।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পর ওয়াশিংটন ডিসির মেয়র মুরিয়েল বাউজার একে ‘অস্বস্তিকর ও নজিরবিহীন’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি মনে করেন, ট্রাম্পের ডিসি সম্পর্কে ধারণা তৈরি হয়েছে তার আগের মেয়াদের কোভিড পরিস্থিতির অভিজ্ঞতা থেকে, যখন অপরাধের হার বেড়ে গিয়েছিল।

অন্যদিকে ডিসি পুলিশ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গ্রেগরি পেম্বার্টন এই পদক্ষেপকে সমর্থন করে বলেছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কিছু একটা করা দরকার।

জানা গেছে, এরই মধ্যে ন্যাশনাল গার্ডের ৮০০ জন সদস্যকে সক্রিয় করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জন আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সহায়তার জন্য বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করবেন।

এর বাইরে, ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)-সহ অন্যান্য সংস্থার কর্মকর্তারাও নিরাপত্তা বিধানে কাজ করছেন।

ডিসির অপরাধ পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে দেখা যায়, গত বছর, অর্থাৎ ২০২৩ সালে, ২৯৭টি খুনের ঘটনা ঘটেছিল, যা ১৯৯৭ সালের পর সর্বোচ্চ।

তবে, ২০২৪ সালে এই সংখ্যা প্রায় ৩২ শতাংশ কমেছে। চলতি বছরেও অপরাধের হার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছে।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের ফলে রাজধানীতে নিরাপত্তা পরিস্থিতির উন্নতি হবে কিনা, সেটি এখন দেখার বিষয়।

তবে, স্থানীয় সরকার এবং ফেডারেল সরকারের মধ্যে ক্ষমতার এই টানাপোড়েন ভবিষ্যতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *