গানের সুরে মাদক সাম্রাজ্যের জয়গান? ট্রাম্পের নিশানায় সংগীতশিল্পীরা!

মেক্সিকোর মাদক সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের পদক্ষেপ, এবার নিশানায় সঙ্গীতের জগৎ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে মেক্সিকোর মাদক কারবারিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। এরপর সেই নিশানায় এলো মাদক ব্যবসা নিয়ে গান করা শিল্পীরা। সম্প্রতি এমনটাই দেখা যাচ্ছে।

গানের মাধ্যমে মাদক সম্রাটদের মহিমান্বিত করার অভিযোগে মেক্সিকান ব্যান্ড দলের ভিসা বাতিল করছে যুক্তরাষ্ট্র।

নার্কো করিডোস হলো মেক্সিকোর লোকসংগীতের একটি ধারা। এই ধারার গানে মাদক ব্যবসার জগৎ ও মাদক সম্রাটদের নিয়ে গল্প তুলে ধরা হয়। গানগুলো মাদক ব্যবসার আন্ডারওয়ার্ল্ডের চিত্র ফুটিয়ে তোলে।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে এই ধরনের গানগুলো ব্যাপক সমালোচনার শিকার হয়েছে। সমালোচকদের মতে, এই গানগুলো মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মহিমান্বিত করে এবং এর মাধ্যমে সমাজে অপরাধকে উৎসাহিত করা হয়।

এই ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ‘লস অ্যালেগ্রেস দেল বারানকো’ নামের একটি ব্যান্ড দল মেক্সিকোর সাপোপান শহরে একটি কনসার্টে অংশ নেয়। কনসার্টে তারা ‘এল দেল প্যালেঙ্ক’ শিরোনামের একটি গান পরিবেশন করে, যেখানে মাদক চক্রের প্রধানের প্রশংসা করা হয়।

গানটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে যুক্তরাষ্ট্র সরকার তাদের ভিসা বাতিল করে দেয়। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানায়, এই ধরনের গান মাদক সম্রাটদের মহিমান্বিত করে, যা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের এই পদক্ষেপের পর মেক্সিকোর সরকারও নড়েচড়ে বসেছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট ক্লডিয়া শেইনবাম এই ধরনের গান পরিবেশনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। যদিও তিনি সরাসরি গান নিষিদ্ধ করার বিরোধিতা করেছেন, তবে ভালোবাসার গান প্রচারের ওপর জোর দিয়েছেন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের কঠোর নীতির কারণে অনেক শিল্পী এখন আতঙ্কে রয়েছেন। তারা আশঙ্কা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষকে অসন্তুষ্ট করলে তাদের ভিসা বাতিল হতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রে গান করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

অন্যদিকে, এই নিষেধাজ্ঞার ফলে নার্কো করিডোস গানের জনপ্রিয়তা আরও বাড়ছে। অনেকে মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ সঙ্গীতের স্বাধীনতাকে খর্ব করে এবং এর ফলস্বরূপ গানগুলো আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছায়।

আটলান্টার একটি কনসার্টে আসা এক দর্শক ভায়োলেট উরেস্তি বলেন, “গানগুলোর একটা আলাদা আবেদন আছে, যা মানুষকে একত্রিত করে। যদি তারা গানগুলো নিষিদ্ধ করে, তবুও আমরা শুনব।”

বর্তমানে মেক্সিকোর কয়েকটি রাজ্যে নার্কো করিডোস গান পরিবেশন নিষিদ্ধ করার চেষ্টা চলছে। তবে অনেক শিল্পী মনে করেন, এই ধরনের পদক্ষেপ সঙ্গীতের কণ্ঠরোধ করার শামিল। তারা মনে করেন, এর মাধ্যমে বরং গানের প্রতি মানুষের আগ্রহ আরও বাড়বে।

তথ্যসূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *