বার্বির উপর শুল্ক! ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে কি তবে বিলাসবহুল গাড়ির সুবিধা?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি নিয়ে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে তিনি খেলনা প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ম্যাটেলের তৈরি বার্বি ও হট হুইলস-এর মতো পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করেছেন, অন্যদিকে যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা বিলাসবহুল গাড়ির ওপর শুল্ক কমানোর ঘোষণা দিয়েছেন।

এই দুই ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে একদিকে যেমন সাধারণ মার্কিন ভোক্তাদের ওপর প্রভাব পড়বে, তেমনই প্রশ্ন উঠেছে বাণিজ্যনীতির পক্ষপাতিত্ব নিয়েও।

জানা গেছে, ট্রাম্প যুক্তরাজ্যের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনার অংশ হিসেবে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এর ফলে রোলস-রয়েস, বেন্টলি এবং জাগুয়ারের মতো বিলাসবহুল গাড়ির ওপর শুল্ক কমবে।

যদিও এই ধরনের গাড়ির বাজার তুলনামূলকভাবে ছোট, কিন্তু এর মাধ্যমে ধনী শ্রেণির সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। শুল্ক কমানোর ফলে প্রাথমিকভাবে বছরে এক লাখ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের গাড়ি, যা যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা হয়, তার ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে।

এর বেশি গাড়ি হলে ২৫ শতাংশ শুল্ক ধার্য করা হবে।

অন্যদিকে, ম্যাটেলের খেলনার ওপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাবের কারণ হিসেবে জানা যায়, কোম্পানিটি তাদের উৎপাদিত খেলনা, বিশেষ করে বার্বি এবং হট হুইলস, যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি করতে রাজি নয়।

ম্যাটেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে খেলনা তৈরি করলে তা বেশি দামে বিক্রি করতে হবে, যা ক্রেতাদের জন্য কঠিন হবে। ট্রাম্প এই যুক্তির বিরোধিতা করে বলেছেন, তিনি খেলনার ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

এতে করে ম্যাটেল যুক্তরাষ্ট্রে তাদের খেলনা বিক্রি করতে পারবে না।

অর্থনীতিবিদ এবং বাণিজ্য বিশ্লেষকরা ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন। মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ জাস্টিন উলফার্স এক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, এই বাণিজ্য চুক্তি রোলস-রয়েস, বেন্টলি, জাগুয়ারের মতো গাড়ির দাম কমাবে, যা সাধারণ মানুষের জন্য উপকারী হবে না।

উলফার্স আরও উল্লেখ করেছেন, এই চুক্তিতে খেলনা বাদে অন্য কোনো পণ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক ছাড়ের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্য নীতির প্রভাব বাংলাদেশের বাজারেও পড়তে পারে। বিশ্ব অর্থনীতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে গিয়ে বিভিন্ন দেশের আমদানি ও রপ্তানি নীতিতে পরিবর্তন আসে, যা সরাসরি বিভিন্ন পণ্যের দামের ওপর প্রভাব ফেলে।

উদাহরণস্বরূপ, খেলনার ওপর শুল্ক বাড়ানো হলে, তা আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম বাড়িয়ে দিতে পারে, যা বাংলাদেশের বাজারেও খেলনার দামের ওপর প্রভাব ফেলবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, শুল্কের এই ধরনের পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষের জন্য ‘প্রতিক্রিয়াশীল কর’ হিসেবে কাজ করবে। এর ফলে একদিকে যেমন কিছু নির্দিষ্ট পণ্যের দাম কমবে, তেমনই খেলনার মতো প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *