ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতিতে বড় ধাক্কা? শুল্ক নিয়ে আদালতে ঝড়!

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতিতে পরিবর্তনের আভাস: ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ক্ষমতা নিয়ে আইনি জটিলতা।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্যনীতি নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ মামলা বর্তমানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। এই মামলার রায় ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের ক্ষমতাকে নতুন করে সংজ্ঞায়িত করতে পারে, যা বিশ্ব বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

মামলাটি মূলত ট্রাম্প সরকারের বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর শুল্ক আরোপের আইনি বৈধতা নিয়ে। ট্রাম্প প্রশাসন আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (International Emergency Economic Powers Act, IEEPA) ব্যবহার করে এই শুল্কগুলি আরোপ করেছিল। এই আইনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট জরুরি পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিতে পারেন। কিন্তু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক এবং যুক্তরাষ্ট্রের ১২টি অঙ্গরাজ্য এই আইনের অপব্যবহারের অভিযোগ এনে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।

তাদের যুক্তি হলো, এই আইনের অধীনে এত ব্যাপক হারে শুল্ক আরোপ করার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের নেই।

মামলার শুনানিতে, ফেডারেল আপিল আদালত ট্রাম্পের শুল্ক নীতি বহাল রেখেছে, তবে চূড়ান্ত রায় এখনো আসেনি। এই মামলার ফল আসতে কয়েক সপ্তাহ বা মাসও লাগতে পারে। যদি আদালত আবেদনকারীদের পক্ষে রায় দেয়, তবে ট্রাম্পের বাণিজ্য কৌশল মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

বিশেষ করে, যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে, তাদের ক্ষেত্রে শুল্কের হার পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে।

এই মামলার রায় শুধু যুক্তরাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং এর প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হবে। কারণ, শুল্কের কারণে বিশ্ব বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, যদি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো দেশের বাণিজ্য চুক্তি বাতিল হয়, তবে সেই দেশের রপ্তানিকারকদের জন্য এটি একটি বড় ধাক্কা হবে।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য শুল্ক আরোপের বিকল্প পথও খোলা রয়েছে। তারা বাণিজ্য সম্প্রসারণ আইন ১৯৬২-এর ২৩২ ধারা এবং বাণিজ্য আইন ১৯৭৪-এর ৩০১ ধারা ব্যবহার করতে পারে।

এই দুটি আইনের অধীনে, জাতীয় নিরাপত্তা এবং বাণিজ্য চুক্তির লঙ্ঘনের যুক্তিতেও শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে। সম্প্রতি, ট্রাম্প প্রশাসন ব্রাজিলের পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বাড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মামলার রায় যাই হোক না কেন, যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতিতে পরিবর্তন আসবেই। যদি আদালত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে রায় দেয়, তাহলে তাঁর প্রশাসন হয়তো নতুন কোনো আইনের আশ্রয় নেবে অথবা বিদ্যমান আইনগুলো নতুন করে ব্যবহারের চেষ্টা করবে।

এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, বিশ্ব বাজারে শুল্ক বাড়লে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিতেও প্রভাব পড়তে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যেতে পারে, যা দেশের অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। তাই, বাংলাদেশের উচিত হবে বিশ্ব বাজারের এই পরিবর্তনগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সেই অনুযায়ী বাণিজ্য কৌশল নির্ধারণ করা।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *