ট্রাম্পের শুল্ক: ইউরোপীয় অর্থনীতিতে অশনি সংকেত!

যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের কারণে ইউরোপীয় অর্থনীতিতে দেখা দিয়েছে শঙ্কার ছায়া, যা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন যদি ইউরোপীয় পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বৃদ্ধি করে, তবে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে ইউরোপের অর্থনীতিতে। এই পরিস্থিতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমিয়ে দিয়েছে, যা বাংলাদেশের বাণিজ্য এবং অর্থনীতির ওপরও প্রভাব ফেলতে পারে।

ইউরোপীয় কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ইউরোজোনের অন্তর্ভুক্ত দেশগুলোর অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চলতি বছর ১.৩ শতাংশ থেকে কমে ০.৯ শতাংশে দাঁড়াতে পারে।

এমনকি, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২৫ সালের প্রবৃদ্ধিও ১.৬ শতাংশ থেকে কমে ১.৪ শতাংশে নেমে আসার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে জার্মানির অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

রপ্তানি নির্ভর এই দেশটির চলতি বছরে কোনো প্রবৃদ্ধি নাও হতে পারে।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে জার্মানির জ্বালানি খরচ বেড়েছে, সেইসঙ্গে অবকাঠামো খাতে বিনিয়োগের অভাব এবং চীনের সঙ্গে তীব্র প্রতিযোগিতার কারণে দেশটির অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতি বিষয়ক কমিশনার ভালডিস ডোমব্রোভস্কিস বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ২০ শতাংশ শুল্কের কারণে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে, যা কোভিড-১৯ মহামারীর সময় দেখা দেওয়া পরিস্থিতির মতোই।

যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়ন মনে করে, তাদের অর্থনীতি এখনো স্থিতিশীল রয়েছে এবং কর্মসংস্থানও ভালো আছে। তবে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

কারণ, ধরে নেওয়া হচ্ছে, আলোচনার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এই শুল্কের হার ২০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশে নামানো সম্ভব হবে।

যদিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাণিজ্য বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তা মারোস সেফকোভিক এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথা বলেছেন, তবে ট্রাম্প প্রশাসন শুল্ক কমাতে কতটা রাজি হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়।

এছাড়াও, ইস্পাত এবং অটোমোবাইলসহ বিভিন্ন পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকলে এবং কম্পিউটার চিপ ও ঔষধের মতো কিছু পণ্যে শুল্ক ছাড় অব্যাহত থাকলে, ইউরোপের অর্থনীতির ওপর আরও বেশি চাপ সৃষ্টি হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইউরোপের অর্থনীতির এই দুর্বলতা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার। ইউরোপীয় ইউনিয়নে যদি অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দেয়, তবে বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কারণ, ইউরোপে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যেতে পারে।

তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিবর্তনে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে এবং নতুন বাজার অনুসন্ধানে জোর দিতে হবে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *