যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ব বাণিজ্য নতুন এক সংকটের দিকে যাচ্ছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিভিন্ন দেশের অর্থনীতিতে, যার আঁচ সম্ভবত খুব শীঘ্রই বাংলাদেশেও লাগতে পারে।
সম্প্রতি ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা মূলত বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে।
এই নতুন শুল্ক নীতির আওতায় চীন, ভিয়েতনাম, তাইওয়ান সহ বেশ কয়েকটি দেশের পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্য হারে বাড়তে পারে। এর মধ্যে চীনের পণ্যের উপর শুল্কের হার সবচেয়ে বেশি, যা প্রায় ৫৪ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
যদি চীন ভেনেজুয়েলা থেকে তেল কেনে, তবে এই শুল্কের পরিমাণ আরও বেড়ে ৭৯ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। এছাড়া, ভিয়েতনাম থেকে আসা পণ্যের উপর প্রায় ৪৬ শতাংশ এবং তাইওয়ান থেকে আসা পণ্যের উপর প্রায় ৩২ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে।
এই শুল্ক নীতির ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্টফোন, কম্পিউটার মনিটর, সেমিকন্ডাক্টর, গাড়ি, গৃহস্থালীর সরঞ্জাম, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওয়াইফাই রাউটার এবং এলইডি লাইট সহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে পারে। কারণ, এই পণ্যগুলোর সিংহভাগই চীন, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ান থেকে আমদানি করা হয়।
উদাহরণস্বরূপ, গত বছর যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে প্রায় ৪৩৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। একই সময়ে, চীন, ভিয়েতনাম ও তাইওয়ান থেকে ল্যাপটপ ও ট্যাবলেট আমদানি করা হয়েছে প্রায় ৪৭.২ বিলিয়ন ডলারের।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই শুল্কের কারণে পণ্যের দাম বাড়লে তা সরাসরি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভোক্তাদের উপর চাপ ফেলবে। ব্যবসায়ীরাও এই বাড়তি শুল্কের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
এমনকি, এই নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে। কারণ, শুল্ক আরোপের ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা বিশ্বজুড়ে পণ্যের সরবরাহ এবং দামের উপর প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশের বাজারেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে। বাংলাদেশ বিভিন্ন দেশ থেকে, বিশেষ করে চীন থেকে, বিপুল পরিমাণ পণ্য আমদানি করে।
এই শুল্ক নীতির কারণে যদি চীন থেকে আসা পণ্যের দাম বাড়ে, তাহলে তা বাংলাদেশের বাজারেও অনুভূত হতে পারে। বিশেষ করে, ইলেকট্রনিক পণ্য, পোশাক এবং খেলনার মতো জিনিসের দাম বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের দিকে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের এবং সাধারণ মানুষের সতর্ক দৃষ্টি রাখা দরকার।
তথ্য সূত্র: সিএনএন