ট্রাম্পের শুল্ক: ভোক্তাদের কপালে দুশ্চিন্তা?

যুক্তরাষ্ট্রে শুল্ক নিয়ে অস্থিরতা: বাড়ছে পণ্যের দাম?

যুক্তরাষ্ট্রের বন্দরগুলোতে আমদানি কমে যাওয়ায় শুল্ক কমানোর খবর ব্যবসায়ীদের জন্য সুখবর ছিল। কিন্তু সেই স্বস্তি বেশিদিন টেকেনি।

আদালতের নির্দেশে কিছু শুল্ক বাতিল হলেও, তা আবার বহাল করা হয়েছে। এই কারণে বাজারে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে, যার ফলস্বরূপ জিনিসপত্রের দাম বাড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কের এই ওঠা-নামার কারণে ব্যবসায়ীরা পণ্য আমদানিতে দ্বিধাগ্রস্ত। কারণ, ব্যবসায়ীরা যখন পণ্য আমদানির পরিকল্পনা করেন, তখন অনেক দিন আগে থেকে প্রস্তুতি নিতে হয়।

বাজারের এই অনিশ্চয়তা তাদের জন্য উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর লস অ্যাঞ্জেলেস-এর তথ্য অনুযায়ী, মে মাসের শেষ সপ্তাহে আগের বছরের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ আমদানি কমেছে।

সিয়াটল ও ট্যাকোমা বন্দরের সমন্বয়ে গঠিত ‘নর্থওয়েস্ট সিপোর্ট অ্যালায়েন্স’-এর তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিল মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে আমদানি কমেছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

আগে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হতো, যা কমিয়ে এখন ৩০ শতাংশ করা হয়েছে।

কিন্তু এর পরেও বন্দরগুলোতে পণ্য আসার পরিমাণ সেভাবে বাড়েনি। লস অ্যাঞ্জেলেস বন্দরের নির্বাহী পরিচালক জেন সেরোকা জানিয়েছেন, চীনের ওপর ধার্য করা শুল্কের কারণে অনেক ব্যবসায়ী এখন বেশি দামে পণ্য আমদানি করতে চাইছে না।

যেসব ব্যবসায়ীরা এই বাড়তি দাম দিতে পারছেন, তারা ইতোমধ্যে তৈরি পোশাকের মতো পণ্য পাঠাচ্ছেন। তবে নতুন করে তারা কোনো কারখানার অর্ডার দিচ্ছেন না।

এই বিষয়ে সেরোকা আরও বলেন, বাণিজ্যনীতি এবং শুল্কের বিষয়ে আসা বিভিন্ন তথ্যের কারণে ব্যবসায়ীরা ‘অপেক্ষা করো এবং দেখো’ নীতি গ্রহণ করেছেন।

যদিও লস অ্যাঞ্জেলেস বন্দরে পরিস্থিতির ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। জুনের প্রথম সপ্তাহে ৯৬ হাজার কন্টেইনার আসার কথা, যেখানে মে মাসের শেষ সপ্তাহে এসেছিল ৬৯ হাজার কন্টেইনার।

জুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে এই সংখ্যা ১ লাখ ৬ হাজারে পৌঁছাতে পারে।

তবে বন্দরের কর্মকর্তারা বলছেন, পরিস্থিতি এখনো স্বাভাবিকের থেকে অনেক দূরে।

জুনের প্রথম দুই সপ্তাহে জাহাজ আসার কথা থাকলেও, ১০টি ট্রিপ বাতিল করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বাজারে পণ্যের সংকট হয়তো হবে না, তবে পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

কারণ, শুল্কের এই অনিশ্চয়তা ব্যবসায়ীদের জন্য বাড়তি খরচ তৈরি করছে। ওয়ালমার্ট, হোম ডিপো এবং টার্গেটের মতো বড় কোম্পানিগুলো ইতোমধ্যে জানিয়েছে, তারা শুল্কের প্রভাব কমাতে পণ্যের দাম বাড়াবে।

আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে স্থিতিশীলতা খুবই জরুরি।

কিন্তু শুল্কের এই পরিবর্তন ব্যবসায়ীদের জন্য পরিকল্পনা করা কঠিন করে তুলেছে। এখন দেখার বিষয়, এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব বাণিজ্য কিভাবে প্রভাবিত হয়।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *