ভয়ংকর সিদ্ধান্ত! ট্রাম্পের শুল্ক হারানোয় ব্যবসায়ীদের টাকা ফেরত?

ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর আরোপিত শুল্ক (ট্যারিফ) নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে। আদালতের রায়ে জানা গেছে, এই শুল্কগুলো সম্ভবত অবৈধ ছিল।

এর ফলস্বরূপ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীরা প্রায় ২শ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ ফেরত পেতে পারে। তবে, এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি, কারণ ট্রাম্প প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে আপিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

আদালতের এই রায়ের মূল কারণ হলো, ট্রাম্প সরকার আন্তর্জাতিক জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইন (International Emergency Economic Powers Act – IEEPA) ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের ওপর, যেমন ভারত ও ব্রাজিলের ওপর ৫০ শতাংশ পর্যন্ত এবং চীনের ওপর ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক বৃদ্ধি করেছিল।

এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীরা আদালতে যান এবং তাদের যুক্তি ছিল, এই শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে আইনী প্রক্রিয়া মানা হয়নি।

ইতিমধ্যে, গত ২৪শে আগস্ট পর্যন্ত, মার্কিন ব্যবসায়ীরা এই শুল্ক বাবদ ২১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি অর্থ পরিশোধ করেছেন। এখন যদি সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখে, তাহলে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যবসায়ীদের ফেরত দিতে হতে পারে।

তবে, এই প্রক্রিয়াটি সহজ হবে না। সুপ্রিম কোর্টের শুনানির জন্য অপেক্ষা করতে হবে, যা সম্ভবত আগামী মাসেই শুরু হবে।

এই মামলার রায় শুধু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও এর গভীর প্রভাব পড়তে পারে। যদি আদালত ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের ক্ষমতাকে অবৈধ ঘোষণা করে, তাহলে ভবিষ্যতে অন্য দেশগুলোও একই ধরনের পদক্ষেপ নিতে উৎসাহিত হতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ, কোনো পণ্যের দাম যদি ১০০ টাকা হয়, তাহলে শুল্কের কারণে সেই পণ্যের দাম ১৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে।

এই বিষয়ে অর্থনীতিবিদদের মধ্যে ভিন্নমত রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এই অর্থ ফেরত দেওয়া হলে তা মার্কিন অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি (inflation) বাড়িয়ে দিতে পারে। কারণ, এর ফলে সরকারের ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়তে পারে।

আবার, এই অর্থ ফেরত পেলে ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে এবং তাদের ব্যবসা আরও ভালোভাবে চালানোর সুযোগ তৈরি হবে।

যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বিভাগ এখনো জানায়নি কিভাবে এই অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। তবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন বিশেষজ্ঞ টেড মারফির মতে, সরকার হয়তো সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীকে সরাসরি অর্থ ফেরত দিতে পারে অথবা ব্যবসায়ীদের আলাদাভাবে আদালতের দ্বারস্থ হতে বলতে পারে।

অথবা, সরকার একটি প্রশাসনিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করতে পারে, যেখানে ব্যবসায়ীদের নির্দিষ্ট আবেদন করতে হবে।

এই মামলাটি এখনো বিচারাধীন থাকায়, এর ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে, এটি স্পষ্ট যে, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি নিয়ে সৃষ্ট জটিলতা বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় প্রভাব ফেলতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *