ট্রাম্পের ‘মুক্তি দিবস’: বুধবার কি চমক? শুল্ক নিয়ে উদ্বেগে বিশ্ব!

যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী ২রা এপ্রিল ‘মুক্তি দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে শুল্ক আরোপের একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন। হোয়াইট হাউজের প্রাক্তন প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সোমবার সাংবাদিকদের জানান, এই ঘোষণাটি রোজ গার্ডেনে এক সংবাদ সম্মেলনে করা হবে।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল উদ্দেশ্য হলো, বাণিজ্য ক্ষেত্রে বিদ্যমান কিছু ‘অন্যায্য চর্চা’র অবসান ঘটানো, যা তিনি আমেরিকান শ্রমিকদের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করেন।

তবে, শুল্ক পরিকল্পনার বিস্তারিত এখনো অজানা। বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্প ও তার উপদেষ্টারা বিভিন্ন প্রস্তাব করেছেন।

এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো—অন্যান্য দেশগুলোর ওপর পাল্টা শুল্ক আরোপ করা। উদাহরণস্বরূপ, কানাডা যদি কোনো মার্কিন পণ্যের ওপর ২৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রও তাদের পণ্যের ওপর একই হারে শুল্ক আরোপ করতে পারে।

লেভিট উল্লেখ করেছেন, যদিও কাগজে-কলমে এই শুল্কের হার অনেক বেশি, বাস্তবে তা হয়তো কখনোই নেওয়া হয় না, কারণ উচ্চ শুল্ক আরোপকারী দেশগুলো সাধারণত যুক্তরাষ্ট্র থেকে খুব কম পণ্য আমদানি করে।

লেভিট আরও বলেন, এই উচ্চ শুল্কের কারণে অনেক আমেরিকান তাদের ব্যবসা ও চাকরি হারিয়েছেন। তাই এখন পারস্পরিকতার সময় এসেছে এবং প্রেসিডেন্টের উচিত আমেরিকান জনগণের জন্য সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া।

আরেকটি বিষয় হলো, ট্রাম্পের উপদেষ্টাদের মধ্যে এই শুল্ক পরিকল্পনা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে। কারো কারো মতে, সব দেশের সঙ্গেই এই ধরনের শুল্ক আরোপ করা উচিত, আবার কারো মতে, কিছু নির্দিষ্ট দেশের সঙ্গে আলোচনা করে শুল্কের হার কমানো যেতে পারে।

এমনও শোনা যাচ্ছে, এই শুল্কের ঘোষণা এপ্রিলের পরিবর্তে জুন মাসেও হতে পারে।

এই শুল্ক নীতি কিভাবে কাজ করবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, সাবেক বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো ধারণা করছেন, এই শুল্ক থেকে বছরে প্রায় ৬০০ বিলিয়ন ডলার রাজস্ব আয় হতে পারে।

তবে, অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, শুল্কের কারণে অনেক পণ্যের দাম বাড়বে, যা ভোক্তাদের ক্রয় ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এবং এর ফলে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে।

এরই মধ্যে শুল্কের আশঙ্কায় ভোক্তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব দেখা দিয়েছে এবং বিভিন্ন বিশ্লেষক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার সম্ভাবনা বাড়ছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।

এই শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্যকে কিভাবে প্রভাবিত করবে, তা এখনো নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। তবে, এর ফলে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কে পরিবর্তন আসতে পারে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিও এর দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মতো কোনো পণ্যের ওপর শুল্ক বাড়ানো হলে, তা বাংলাদেশের রপ্তানিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।

তাই, এই শুল্ক পরিকল্পনার ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন আসে, সেদিকে আমাদের বিশেষভাবে নজর রাখতে হবে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *