যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে ব্যর্থ হলে ১৫0টি দেশের উপর শুল্ক বাড়ানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
খবরটি প্রকাশ করেছে সিএনএন।
আবু ধাবিতে এক ব্যবসায়িক গোলটেবিলে ট্রাম্প বলেন, প্রায় ১৫০টি দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করতে চাইছে।
তবে এতগুলি দেশের সঙ্গে দ্রুত চুক্তি করা সম্ভব নয়। তাই আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে বাণিজ্য সচিব স্কট বেসেন্ট এবং বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে চিঠি পাঠাবেন এবং তাদের শুল্কের পরিমাণ জানিয়ে দেবেন।
এই সিদ্ধান্তের ফলে, যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তি করতে পারবে না, তাদের জন্য শুল্কের বোঝা বাড়বে।
ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিভিন্ন পণ্যের আমদানি খরচ বাড়তে পারে, যা চূড়ান্তভাবে ভোক্তাদের উপর প্রভাব ফেলবে।
গত এপ্রিল মাসে, ট্রাম্প তার ‘রিসিপোকাল ট্যারিফ’ বা পারস্পরিক শুল্কের উপর ৯০ দিনের জন্য স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।
এই সময়সীমার মধ্যে দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে, সেই সময়সীমা দ্রুত ফুরিয়ে আসছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের মতে, প্রায় একশ’টি দেশ এরই মধ্যে বাণিজ্য চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে।
তবে, এত অল্প সময়ে সবার সঙ্গে চুক্তি করা কঠিন। এর ফলস্বরূপ, চুক্তি করতে ব্যর্থ দেশগুলোকে উচ্চ হারে শুল্ক দিতে হতে পারে। এমনকি কিছু ক্ষেত্রে এই শুল্কের হার ৫০ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে।
বর্তমানে, যুক্তরাষ্ট্রে আমদানি করা প্রায় সব পণ্যের উপর ১০ শতাংশ শুল্ক বিদ্যমান।
তবে, ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন যে, চুক্তিতে রাজি না হওয়া দেশগুলোর জন্য এই শুল্কের হার আরও বাড়ানো হতে পারে।
ইতিমধ্যে, যুক্তরাজ্য এবং চীনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য চুক্তির কাঠামো ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে, অন্যান্য দেশগুলোর জন্য পরিস্থিতি ভিন্ন হতে পারে। যুক্তরাজ্যের ক্ষেত্রে শুল্কের হার ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হলেও, অন্যান্য দেশগুলোর জন্য এই হার আরও বেশি হতে পারে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, শুল্কের এই পরিবর্তন ব্যবসা এবং ভোক্তাদের মধ্যে অনিশ্চয়তা তৈরি করতে পারে।
যদিও ট্রাম্প তার কিছু আগ্রাসী বাণিজ্য নীতি থেকে সরে এসেছেন, তবুও যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দা আসার সম্ভাবনা এখনো রয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাণিজ্য চুক্তিগুলো অত্যন্ত জটিল প্রক্রিয়া এবং এতে অনেক সময় লাগে।
বিভিন্ন পণ্যের বিস্তারিত বিষয় এবং শুল্ক-বহির্ভূত বাধাগুলো নিয়ে আলোচনা করতে হয়। এছাড়া, রাজনৈতিক বিবেচনাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।
যুক্তরাষ্ট্রের এই শুল্ক নীতি বিশ্ব বাণিজ্যকে নতুন করে প্রভাবিত করতে পারে।
বিশেষ করে, বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এটি একটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে।
কারণ, বিশ্ব বাণিজ্যে শুল্কের পরিবর্তন আমাদের রপ্তানি এবং আমদানির খরচ বাড়িয়ে দিতে পারে।
সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্রের এই পদক্ষেপের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে যে পরিবর্তন আসবে, তার দিকে আমাদের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: CNN