যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে চীন পণ্যের ওপর যে শুল্ক আরোপ করা হয়েছিল, তা এখনো বহাল রয়েছে।
এর প্রতিক্রিয়ায় চীন জানিয়েছে, তারা এই শুল্কের বিরুদ্ধে শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাবে। উভয় দেশের এই টানাপোড়েন শুধু তাদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং এর প্রভাব পড়ছে বিশ্ব অর্থনীতিতে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই শুল্কের কারণে একদিকে যেমন চীনের অর্থনীতিতে চাপ সৃষ্টি হতে পারে, তেমনই এর প্রভাব পড়তে পারে বিশ্ব বাণিজ্যেও। বিশেষ করে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য এই বাণিজ্য যুদ্ধ একটি উদ্বেগের কারণ।
কারণ, এর ফলে বিশ্ব বাজারে পণ্যের দাম বাড়তে পারে, যা আমদানি নির্ভর দেশগুলোর জন্য ক্ষতিকর।
তবে, এই অস্থিরতার মধ্যেও ইউরোপ ও এশিয়ার শেয়ারবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। বিনিয়োগকারীরা মনে করছেন, এই বাণিজ্য যুদ্ধের একটি সমাধান আসবে এবং বাজার স্থিতিশীল হবে।
এমন পরিস্থিতিতে অনেক বিনিয়োগকারী ঝুঁকি নিতেও প্রস্তুত।
এই বাণিজ্য যুদ্ধের সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখনো সেভাবে দৃশ্যমান না হলেও, এর ভবিষ্যৎ নিয়ে অর্থনীতিবিদরা সতর্কবার্তা দিচ্ছেন।
তাদের মতে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি বাড়তে পারে। কারণ, চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়লে তা দেশের বাজারে প্রভাব ফেলবে।
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পণ্যের প্রবেশাধিকার কঠিন হয়ে পড়লে রপ্তানি আয় কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতি মূলত তৈরি পোশাক শিল্পের ওপর নির্ভরশীল। চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে যদি এই শিল্পের কাঁচামালের দাম বাড়ে, তাহলে তা পোশাক শিল্পের উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দেবে, যা দেশের অর্থনীতির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হবে।
বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত হবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া। এক্ষেত্রে, বিকল্প বাজার খুঁজে বের করা এবং রপ্তানি পণ্যের বহুমুখীকরণ করা জরুরি।
একইসঙ্গে, বাণিজ্য চুক্তি এবং শুল্কনীতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা করা যেতে পারে, যাতে দেশের অর্থনীতি এই বৈশ্বিক অস্থিরতা মোকাবেলা করতে পারে।
সুতরাং, যুক্তরাষ্ট্র-চীনের বাণিজ্য বিরোধ শুধু দুটি দেশের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে এই পরিস্থিতিতে তাদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কৌশলগত পদক্ষেপ নিতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা