ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ: বিশ্বজুড়ে ত্রাস, বাজারে ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের ক্ষতি!

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে শেয়ার বাজারে বিশাল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে বিভিন্ন দেশের কোম্পানিগুলো। এই পরিস্থিতিতে, বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা আসার সম্ভবনা দেখা দিয়েছে এবং এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সম্প্রতি তার বাণিজ্য নীতি ঘোষণা করেছেন, যেখানে বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে। এর ফলে, ওয়াল স্ট্রিটে প্রায় ২.৫ ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি ক্ষতি হয়েছে। শুধু তাই নয়, বিশ্বের অন্যান্য প্রধান শেয়ার বাজারগুলোতেও দরপতন দেখা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দিয়েছে এবং বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় ঝুঁকি তৈরি করেছে। বিশেষ করে, চীন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোর উপর এই শুল্কের প্রভাব মারাত্মক হতে পারে। এই শুল্কের কারণে অনেক দেশের অর্থনৈতিক সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

এই পরিস্থিতিতে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। যুক্তরাজ্যও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার চেষ্টা করছে, তবে প্রয়োজনে তারাও শুল্ক আরোপ করতে পারে বলে জানা গেছে।

এই শুল্ক নীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এমন দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কিছু দেশ। উদাহরণস্বরূপ, কম্বোডিয়া, ভিয়েতনাম এবং মায়ানমারের মতো দেশগুলোতে শুল্কের হার উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে, পোশাক এবং জুতা প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের জন্য পণ্যের দাম বৃদ্ধি করবে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। সেই সাথে, জীবনযাত্রার ব্যয়ও বাড়িয়ে দেবে।

বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের জন্য উদ্বেগের কারণ। কারণ, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দিলে, তার প্রভাব বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে পড়তে পারে। বিশেষ করে, তৈরি পোশাক শিল্পের উপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে, যা দেশের অন্যতম প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের উৎস। এছাড়াও, রেমিট্যান্সের উপরও এর প্রভাব পড়তে পারে, কারণ অনেক বাংলাদেশি শ্রমিক বিভিন্ন দেশে কাজ করেন।

অতএব, সরকারের উচিত পরিস্থিতি বিবেচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া, যাতে বিশ্ব বাজারের এই অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত না হয়।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *