মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে এশিয়া ও ইউরোপের শেয়ার বাজারগুলো এর শিকার হয়েছে।
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে, যার প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল কারণ হলো বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমানো। তিনি মনে করেন, বিদেশি পণ্যের ওপর উচ্চ শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ শিল্পকে সুরক্ষা দেওয়া সম্ভব হবে।
কিন্তু এর ফলস্বরূপ, অনেক দেশ পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে শুল্ক বাড়াতে পারে, যা বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য একটি উদ্বেগের কারণ।
এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলোতে, বিশেষ করে চীন, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার বাজারে এই দরপতন বেশি দেখা গেছে। ইউরোপের বাজারেও একই চিত্র পরিলক্ষিত হচ্ছে, যেখানে জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর শেয়ার সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগকারীরা তাদের পুঁজি নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন এবং নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে ঝুঁকছেন।
বাংলাদেশের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতির সরাসরি প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এখনই হয়তো দৃশ্যমান হবে না, তবে এর কিছু পরোক্ষ প্রভাব পড়তে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা যায়, তবে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক ও অন্যান্য রপ্তানি পণ্যের চাহিদা কমতে পারে। এর ফলে, দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনেও একটা প্রভাব পড়তে পারে।
একইসাথে, আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়লে, তা দেশের বাজারে মূল্যস্ফীতি ঘটাতে পারে।
তবে, বাংলাদেশের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল অবস্থানে রয়েছে এবং এই ধরনের বৈশ্বিক অস্থিরতা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে।
সরকার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংক পরিস্থিতি বিবেচনা করে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উচিত হবে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করা এবং নতুন বাজার খুঁজে বের করা।
এছাড়াও, অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি ও রপ্তানি বহুমুখীকরণের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে।
তথ্য সূত্র: আল জাজিরা