আতঙ্কের ঢেউ! মেরু ভালুক থেকে দ্বীপ, ট্রাম্পের শুল্কের শিকার!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন দেশের উপর শুল্ক আরোপ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে দূরবর্তী কিছু অঞ্চল, যাদের সঙ্গে দেশটির বাণিজ্য সম্পর্ক খুবই সামান্য। এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মহলে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের ফলে আর্কটিকে মেরু ভালুকের আবাসস্থল থেকে শুরু করে ছোট ছোট গ্রীষ্মমন্ডলীয় দ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে শুল্কের বোঝা চাপানো হয়েছে।

বুধবার ঘোষিত এই শুল্কের প্রাথমিক হার ছিল ১০ শতাংশ। তবে, কিছু দেশের ক্ষেত্রে এই হার আরও বেশি, বিশেষ করে যাদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য উদ্বৃত্ত রয়েছে।

রাশিয়ার মতো কয়েকটি দেশকে অবশ্য এই তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

তালিকাভুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে নরওয়ের অংশ জন মেইন, যেখানে মানুষের চেয়ে মেরু ভালুকের সংখ্যা বেশি। এছাড়াও, নিউজিল্যান্ডের একটি অংশ, টোকেলাউ দ্বীপপুঞ্জ, যেখানে প্রায় ১,৫০০ মানুষের বাস এবং ক্রিসমাস দ্বীপপুঞ্জও এই শুল্কের আওতায় পড়েছে।

ক্রিসমাস দ্বীপের প্রধান বলেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোনো পণ্য আমদানি করে না। তবে, অস্ট্রেলিয়ার অন্তর্ভুক্ত হিয়ার্ড ও ম্যাকডোনাল্ড দ্বীপপুঞ্জ এবং নরফোক দ্বীপপুঞ্জের মতো কিছু অঞ্চলে শুল্কের হার আরও বেশি নির্ধারণ করা হয়েছে।

নরফোক দ্বীপপুঞ্জের প্রশাসক বলেছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে কোনো শুল্ক নেয় না, তাই এমন সিদ্ধান্তের কারণ তারা বুঝতে পারছেন না।

ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলোর নেতারা এই শুল্কের বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছেন। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের বাণিজ্য নীতি বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, নরফোক দ্বীপপুঞ্জের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো বাণিজ্য সম্পর্ক নেই, তা সত্ত্বেও এই শুল্ক আরোপ করা হয়েছে, যা নীতিনির্ধারকদের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে।

এই শুল্ক আরোপের কারণ এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তর বাণিজ্য নীতির অংশ হতে পারে, যা বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনর্বিবেচনা করতে চাইছে।

এই ধরনের পদক্ষেপের ফলে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য প্রবাহে পরিবর্তন আসতে পারে এবং বিভিন্ন দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ধরনের বাণিজ্য নীতির প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়তে পারে এবং এর ফলে স্থানীয় বাজারেও তার প্রভাব পড়তে পারে।

বাংলাদেশের উচিত হবে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের এই পরিবর্তনগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

তথ্য সূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *