যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য শুল্ক নীতি নিয়ে অনিশ্চয়তা, যুক্তরাজ্যের উদ্বেগের কারণ।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি নিয়ে এখনো পর্যন্ত কাটেনি অনিশ্চয়তা। তার অর্থনৈতিক উপদেষ্টা কেভিন হ্যাসেট সম্প্রতি জানিয়েছেন, যুক্তরাজ্যের মতো দেশগুলোর জন্য ১০ শতাংশ শুল্কের হারই বহাল থাকবে।
এই পরিস্থিতিতে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সরকার শুল্ক হ্রাসের বিষয়ে কোনো ইতিবাচক সিদ্ধান্তের আশা করতে পারছে না।
জানা যায়, ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন দেশের ওপর যে শুল্ক আরোপ করেছে, তার মধ্যে যুক্তরাজ্যের জন্য বিদ্যমান ২৫ শতাংশ শুল্ক বহাল রয়েছে, যা দেশটির স্টিল ও গাড়ির মতো পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদিও কেইর স্টারমারের সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (ফ্রি ট্রেড ডিল) করতে চাইছে, যাতে শুল্কের প্রভাব কমানো যায়।
কিন্তু ট্রাম্পের উপদেষ্টার বক্তব্যে সেই সম্ভাবনা অনেকটা কমে এসেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদ কেভিন হ্যাসেট সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের মন জয় করতে হলে, কোনো দেশের জন্য অসাধারণ কিছু করতে হবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমার মনে হয়, সবাই ধরে নিচ্ছে ১০ শতাংশ শুল্কের হারই স্বাভাবিক পরিস্থিতি।
এর নিচে নামতে হলে অসাধারণ কিছু দরকার।”
অন্যদিকে, কেইর স্টারমার জানিয়েছেন, শুল্ক আরোপের পর তিনি এখনো পর্যন্ত ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলতে পারেননি। যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুল্কের এই পরিবর্তনে তাদের কোনো পূর্বাভাস দেওয়া হয়নি।
যদিও যুক্তরাজ্য বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে শুল্ক কমানোর চেষ্টা করছে, তবে তারা অন্যান্য দেশের সঙ্গেও অর্থনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই বাণিজ্য নীতির কারণে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারেও অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জের এফটিএসই১০০ সূচক এবং যুক্তরাষ্ট্রের এসএন্ডপি ৫০০ সূচক উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে।
প্রযুক্তি নির্ভর নাসডাক কম্পোজিটও ক্ষতির শিকার হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি বিশ্ব অর্থনীতির জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ।
বাংলাদেশের বাণিজ্য বিশ্লেষকদের মতে, বিশ্ব অর্থনীতির এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের জন্য সতর্ক থাকা জরুরি। কারণ, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ওপর বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেকখানি নির্ভরশীল।
বিশেষ করে, পোশাক শিল্পের মতো প্রধান রপ্তানি খাতে এর প্রভাব পড়তে পারে। তারা মনে করেন, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের উচিত হবে নিজস্ব বাণিজ্য কৌশল তৈরি করা এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান