ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে অস্থির বিশ্ব অর্থনীতি, কমছে শেয়ার বাজারের সূচক। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সময় পার করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বাণিজ্য নীতির কারণে আসন্ন মাসগুলোতে মন্দা দেখা দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ার বাজার সোমবার দিনভর নিম্নমুখী ছিল। ডাউ জোন্স সূচক প্রায় ০.৭৫ শতাংশ কমে যায়, যা ৩০০ পয়েন্টের কাছাকাছি।
এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক ১.৩ শতাংশ এবং নাসডাক কম্পোজিট সূচক ২.৩ শতাংশ কমেছে।
এই পরিস্থিতিতে, বিনিয়োগকারীরা বেশ উদ্বেগে রয়েছেন। বাজার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ট্রাম্পের শুল্ক প্রস্তাবের কারণে বিনিয়োগকারীরা এক ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন।
এর ফলস্বরূপ, এস অ্যান্ড পি ৫০০ সূচক এ বছর ৫ শতাংশের বেশি কমেছে। ধারণা করা হচ্ছে, এটি সম্ভবত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে সবচেয়ে খারাপ এবং ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল সময়।
শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক সোমবার ৪ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে এবং প্রথম প্রান্তিকে ১০ শতাংশ পতনের মধ্যে দিয়ে কারেকশন অঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
তাইওয়ানের প্রধান সূচকও ৪ শতাংশের বেশি কমেছে এবং এই প্রান্তিকে ১০ শতাংশ পতন হয়েছে। ইউরোপের বাজারেও একই চিত্র দেখা গেছে।
জার্মানির ড্যাক্স সূচক ১.৫ শতাংশ কমেছে।
গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর বিশ্লেষকরা এস অ্যান্ড পি ৫০০-এর জন্য তাদের বছরের শেষ লক্ষ্যমাত্রা ৬,২০০ থেকে কমিয়ে ৫,৯০০ করেছেন।
বার্কলেস-এর বিশ্লেষকরাও তাদের পূর্বাভাস সংশোধন করে এস অ্যান্ড পি ৫০০-এর জন্য বছরের শেষ লক্ষ্যমাত্রা ৬,৬০০ থেকে কমিয়ে ৫,৯০০ করেছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে যে প্রভাব পড়তে পারে, তা নিয়ে উদ্বেগ বাড়ছে।
গোল্ডম্যান স্যাক্স-এর মতে, শুল্ক বৃদ্ধির কারণে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হতে পারে, বেকারত্ব বাড়তে পারে এবং মুদ্রাস্ফীতি হতে পারে।
তাদের ধারণা, আগামী ১২ মাসের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দা আসার সম্ভাবনা ২০ শতাংশ থেকে বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
শেয়ার বাজারের এই অস্থিরতার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা ট্রাম্পের শুল্ক নীতিকে দায়ী করছেন। তাদের মতে, এই নীতিগুলো বাজারের স্থিতিশীলতাকে প্রভাবিত করছে এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভীতি তৈরি করছে।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম থেকে জানা যায়, বিশ্ব অর্থনীতির এই টালমাটাল পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও এর কিছু প্রভাব পড়তে পারে।
বিশেষ করে, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে। তবে, এই মুহূর্তে এর সরাসরি প্রভাব সম্পর্কে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
তথ্য সূত্র: সিএনএন