ট্রাম্পের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় বিশ্ব, নতুন শুল্ক নিয়ে উদ্বেগে সকলে!

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আবারও শুল্ক আরোপের পরিকল্পনা করছেন, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। এই পদক্ষেপের সম্ভাব্য প্রভাব নিয়ে এখন আলোচনা চলছে, বিশেষ করে বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক এবং বিশ্ব বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।

হোয়াইট হাউসে আসন্ন এক ঘোষণার প্রস্তুতি চলছে, যেখানে ট্রাম্প সম্ভবত বিভিন্ন পণ্যের ওপর শুল্কের পরিমাণ ঘোষণা করবেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয়, বরং বিশ্বের অনেক দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ট্রাম্পের এই পদক্ষেপের মূল কারণ হলো, তিনি মনে করেন অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে ‘অন্যায্য’ বাণিজ্য করছে।

ট্রাম্পের এই শুল্ক নীতি নতুন নয়। ১৯৮০-এর দশকে জাপানের বিরুদ্ধেও তিনি একই ধরনের পদক্ষেপের কথা বলেছিলেন।

বর্তমানে চীন এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে তাঁর ভিন্ন মত রয়েছে। তিনি মনে করেন, এই দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ব্যবসা করে সুবিধা নিচ্ছে।

তাই তিনি এখন আমদানি করা পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করতে চাইছেন, যার মাধ্যমে তিনি আমেরিকার উৎপাদন খাতকে শক্তিশালী করতে চান।

তবে এই ধরনের পদক্ষেপের কারণে বাজারে পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে, যা ভোক্তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। এছাড়াও, অন্য দেশগুলোও পাল্টা ব্যবস্থা নিতে পারে, যা বাণিজ্য যুদ্ধকে আরও বাড়িয়ে দেবে।

এর ফলে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দা দেখা দেওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের অনেক মিত্র দেশ, যেমন কানাডা এবং মেক্সিকোর সঙ্গে সম্পর্কও এই শুল্ক নীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

কানাডার একজন সিনেটর সুসান কলিন্স এই নীতির সমালোচনা করে বলেছেন, তাঁর রাজ্যের অর্থনীতি কানাডার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত এবং এই শুল্ক সেখানকার অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলবে।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য বিষয়ক উপদেষ্টারা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছেন এবং তাঁরা বিভিন্ন পরিকল্পনা পেশ করেছেন।

তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের হাতেই রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত বিশ্ব বাণিজ্য এবং বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

বাংলাদেশের পোশাক, চামড়া ও অন্যান্য পণ্য, যা যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি হয়, সেগুলোর ওপর শুল্ক বাড়লে রপ্তানি কমে যেতে পারে।

এছাড়াও, বিশ্ব বাজারে বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক অস্থিরতা তৈরি হলে, বাংলাদেশের অর্থনীতিও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্তের ফলে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতেও বিভেদ সৃষ্টি হতে পারে। তাঁর দলের অনেক সদস্যও এই নীতির বিরোধিতা করছেন।

সিনেটর রন জনসন জানিয়েছেন, তিনি প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষা করছেন, তবে শুল্ক আরোপের ফলে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।

ট্রাম্প অবশ্য বলেছেন, তিনি হয়তো খুব কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছেন না। তবে তাঁর পুরনো বাণিজ্য বিষয়ক ধারণা এবং বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগের কারণে অনেকেই মনে করছেন, এটি একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *