ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা নিয়ে জল্পনা এখনো থামেনি। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রেসিডেন্ট পদে থাকতে পারেন না, ট্রাম্পের কিছু মন্তব্য এবং তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী স্টিভ ব্যাননের তৎপরতা এই সম্ভাবনাকে জিইয়ে রেখেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক ইতিহাসে এমন দৃষ্টান্ত আছে, যখন প্রেসিডেন্টরা দ্বিতীয় মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে আর নির্বাচনে অংশ নেননি। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৬৮ সালে লিন্ডন বি. জনসন এক টেলিভিশন ভাষণে ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আর প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন না। কিন্তু ট্রাম্পের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। তিনি সরাসরি তৃতীয় মেয়াদের কথা না বললেও, এই বিষয়ে তার মন্তব্যগুলো বেশ ইঙ্গিতপূর্ণ।
ট্রাম্প সম্প্রতি বলেছেন, তিনি এখনো তৃতীয় মেয়াদের বিষয়ে “কিছু ভাবেননি”। তবে তিনি সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র কথা উল্লেখ করেছেন। একইসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেছেন যে তার “সবচেয়ে ভালো জনসমর্থন” রয়েছে। যদিও বিভিন্ন জরিপে তার জনপ্রিয়তা ৫০ শতাংশের নিচে দেখা যায়।
সংবিধানের ২২তম সংশোধনী অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তি দুবারের বেশি প্রেসিডেন্ট হতে পারেন না। ট্রাম্প যদি তৃতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান, তবে তাকে এই সাংবিধানিক বাধা অতিক্রম করতে হবে। এছাড়া, ১২তম সংশোধনীতেও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদের জন্য যোগ্যতার বিষয়ে কিছু নিয়ম রয়েছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের তৃতীয় মেয়াদে আসার সম্ভাবনা খুবই কম। কারণ, সংবিধান পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনীয় সমর্থন পাওয়া কঠিন হবে। তাছাড়া, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি অ্যামি কোনি ব্যারেট স্পষ্ট করে বলেছেন, ২২তম সংশোধনী অনুযায়ী তৃতীয় মেয়াদের কোনো সুযোগ নেই।
তবে, স্টিভ ব্যাননসহ ট্রাম্পের কিছু ঘনিষ্ঠ সহযোগী এখনো তাকে ক্ষমতায় দেখতে চান। তারা বিভিন্নভাবে এই বিষয়ে আলোচনা করছেন এবং জনমত গঠনের চেষ্টা করছেন। তাদের এই তৎপরতা ট্রাম্পের তৃতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনাকে একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্য এবং তার সহযোগীদের তৎপরতা মূলত রাজনৈতিক কৌশল। এর মাধ্যমে তিনি তার সমর্থকদের মধ্যে আগ্রহ ধরে রাখতে এবং বিরোধীদের বিভ্রান্ত করতে চান। তবে, ভবিষ্যতে যদি ট্রাম্প সত্যিই এই ধরনের কোনো পদক্ষেপ নেন, তবে তা নিঃসন্দেহে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বড় ধরনের আলোচনার জন্ম দেবে।
তথ্য সূত্র: ইউএস মিডিয়া রিপোর্ট।