সময় ফুরিয়ে আসছে! বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ট্রাম্পের কপালে চিন্তার ভাঁজ!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্য সময় ফুরিয়ে আসছে, কারণ বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার সময়সীমা দ্রুত এগিয়ে আসছে। বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি বলে আসছেন যে, বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আলোচনা চলছে এবং এর ফলস্বরূপ খুব শীঘ্রই বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে।

কিন্তু বাস্তবে তেমন কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি এখনো দেখা যায়নি।

আলোচনা চলছে এমন দেশগুলোর মধ্যে ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথমে বাণিজ্য চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যায়নি।

যদি কোনো চুক্তি না হয়, তাহলে এর সরাসরি প্রভাব পড়বে বিশ্ব অর্থনীতিতে। বিশেষ করে চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যনীতি আগ্রাসী রূপ নেওয়ায় দেশটির অর্থনীতি এরই মধ্যে দুর্বল হতে শুরু করেছে। গত কয়েক মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মন্দাভাব দেখা দিয়েছে, যা ২০২১ সালের পর প্রথম।

এর কারণ হিসেবে জানা যায়, বিভিন্ন কোম্পানি শুল্কের হাত থেকে বাঁচতে পণ্য মজুদ করতে শুরু করেছে।

আগামী ৮ জুলাই পর্যন্ত ট্রাম্প প্রশাসনের হাতে সময় আছে। এই সময়ের মধ্যে যদি কোনো বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন না হয়, তাহলে বিভিন্ন পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপ করা হতে পারে।

এর ফলে, অনেক দেশের সঙ্গেই যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং বিশ্বজুড়ে পণ্যের দাম বাড়ারও সম্ভাবনা রয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাণিজ্য চুক্তিগুলো সাধারণত দীর্ঘ সময় নেয়। কারণ এতে বিভিন্ন পণ্যের শুল্ক এবং শুল্ক-বহির্ভূত বাধাগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে হয়। তাছাড়া, রাজনৈতিক বিবেচনাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

বিভিন্ন পক্ষ তাদের ভোটারদের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টা করে।

তবে, ট্রাম্প প্রশাসন যদি কোনো ‘চুক্তি’ করে, তবে সেটি সম্ভবত সমঝোতা স্মারক-এর মতো কিছু হবে। এর ফলে, স্বল্প মেয়াদে কোনো একটি দেশের পণ্যের ওপর শুল্ক কমতে পারে, কিন্তু এর উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক প্রভাব পড়তে অনেক সময় লাগতে পারে।

চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সম্পর্ক এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। চীন থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের কারণে দেশ দুটির মধ্যে বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক অংশীদার হলো চীন। এমন পরিস্থিতিতে সরবরাহ শৃঙ্খলে ব্যাঘাত ঘটার আশঙ্কা রয়েছে, যা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে এবং বাজারে জিনিসপত্রের সংকট তৈরি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, চীনের সঙ্গে বাণিজ্য স্বাভাবিক করতে হলে শুল্কের হার উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে হবে। তবে, এতেও অর্থনৈতিক ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কয়েক সপ্তাহ বা মাস লেগে যেতে পারে।

যদিও চীন বাণিজ্য আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছে, তবে এখনো কোনো সমাধানে আসা যায়নি।

যদি এই বাণিজ্য যুদ্ধ দীর্ঘকাল চলতে থাকে, তাহলে এর প্রভাব বাংলাদেশের অর্থনীতিতেও পড়তে পারে। কারণ, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য বিদ্যমান।

তাই, বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের অর্থনীতিকে প্রভাবিত করতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *