ডল বিতর্ক: ট্রাম্পের বাণিজ্য যুদ্ধ, শিশুদের খেলনা কি ঝুঁকিতে?

বাণিজ্য যুদ্ধ: খেলনার বাজারেও কি আঘাত হানছে চীন-মার্কিন টানাপোড়েন?

বিশ্ব অর্থনীতির দুই প্রধান শক্তিধর দেশ, চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব এখন খেলনার বাজারেও দৃশ্যমান হচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে চীন থেকে আসা খেলনার ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে খেলনার দাম বাড়তে পারে এবং এর সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে শিশুদের ওপর।

সম্প্রতি, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) শিশুদের খেলনা প্রসঙ্গে এমন মন্তব্য করেছেন যা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, শিশুদের ৩০টির বদলে হয়তো দুটি খেলনা থাকলেও চলবে।

এই মন্তব্যের জেরে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, খেলনার দাম বাড়লে তা শিশুদের ওপর কেমন প্রভাব ফেলবে? খেলনা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলিও উদ্বিগ্ন, কারণ চীনের থেকে খেলনা আমদানির ওপর উচ্চ হারে শুল্ক বসানো হয়েছে।

এর ফলে খেলনার উৎপাদন খরচ বাড়ছে, যা শেষ পর্যন্ত ক্রেতাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করবে। উদাহরণস্বরূপ, “দ্য লয়াল সাবজেক্টস” (The Loyal Subjects) নামক একটি খেলনা প্রস্তুতকারক সংস্থার প্রধান জোনাথন ক্যাথে (Jonathan Cathey) এই পরিস্থিতিকে “আলোচনার অযোগ্য বাণিজ্য যুদ্ধের” ফল হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে খেলনার ব্যবসা একটি বিশাল বাজার। বিভিন্ন ধরনের পুতুল, যেমন বার্বি (Barbie), ব্র্যাটজ (Bratz) এবং আমেরিকান গার্ল (American Girl) -এর মতো জনপ্রিয় খেলনার চাহিদা ব্যাপক।

বাজার গবেষণা সংস্থা “সারকানা”-র (Circana) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে যুক্তরাষ্ট্রে পুতুলের বাজার ছিল প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ডলার, যা বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৩১ হাজার কোটি টাকার সমান।

তবে, বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে খেলনার দাম বাড়লে অনেক পরিবারের পক্ষে তা কেনা কঠিন হয়ে পড়বে। খেলনা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো হয় দাম বাড়াতে বাধ্য হবে, না হয় মুনাফা কমাতে হবে।

কিছু কোম্পানি চীন বাদে অন্য দেশে উৎপাদন কেন্দ্র সরানোর চেষ্টা করছে, কিন্তু এতেও সময় লাগবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খেলনার দাম বাড়লে অনেক ক্রেতা হয়তো সস্তা এবং নিম্নমানের খেলনা কিনতে উৎসাহিত হতে পারেন। এতে শিশুদের স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রের “কনজিউমার প্রোডাক্ট সেফটি কমিশন” (Consumer Product Safety Commission) খেলনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও, অনলাইনে বিক্রি হওয়া খেলনার ক্ষেত্রে নজরদারি কঠিন হয়ে পড়েছে।

সবমিলিয়ে, মার্কিন-চীন বাণিজ্য যুদ্ধ বিশ্ব অর্থনীতির পাশাপাশি খেলনার বাজারকেও নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এর ফলে খেলনার দাম বাড়তে পারে, যা শিশুদের জন্য খেলনা কেনা কঠিন করে তুলবে।

খেলনা প্রস্তুতকারক সংস্থাগুলো এই পরিস্থিতি কিভাবে মোকাবিলা করে, সেটাই এখন দেখার বিষয়।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *