মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য নীতি নিয়ে সৃষ্ট উদ্বেগে বিশ্বজুড়ে অস্থিরতা বাড়ছে, যা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতি এবং এর ফলস্বরূপ বিশ্ব বাজারের এই টালমাটাল অবস্থা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।
যদিও ট্রাম্প বলছেন যে তিনি নতুন আলোচনার জন্য প্রস্তুত, তবে তার প্রশাসনের বিভিন্ন বক্তব্য এবং নীতির কারণে অনেক প্রশ্ন উঠছে।
গত কয়েকদিনে শেয়ার বাজারে বড় ধরনের দরপতন হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই নয়, টোকিও সহ বিশ্বের বিভিন্ন শেয়ার বাজারেও এর প্রভাব পড়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অস্থিরতা আরও বাড়তে পারে। ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দেওয়া বিভিন্ন বক্তব্যেও বিষয়টি স্পষ্ট নয়, যা বাজারের অনিশ্চয়তা আরও বাড়াচ্ছে।
কেউ বলছেন, শুল্ক নীতি দর কষাকষির একটি কৌশল, আবার কেউ বলছেন বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন করে সাজানোর চেষ্টা চলছে।
ট্রাম্পের এই নীতির মূল কারণ হলো, তিনি মনে করেন অন্য দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাষ্ট্রকে ঠকাচ্ছে। তিনি বিশ্বাস করেন, বাণিজ্য সুরক্ষার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের শিল্পখাতকে পুনরুজ্জীবিত করা যাবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে।
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের আগ্রাসী নীতি বিশ্ব অর্থনীতিকে মন্দার দিকে ঠেলে দিতে পারে। এর ফলে অনেক মানুষের চাকরি হারানোর এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিক মনে করেন, এই শুল্ক নীতি বহাল থাকবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যকে নতুন করে সাজানো দরকার।
অন্যদিকে, অনেকে মনে করছেন, ট্রাম্পের এই নীতি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, কারণ এর ফলে ভোক্তাদের জিনিসপত্রের দাম বাড়বে এবং বাজারের চাহিদা কমবে।
এই পরিস্থিতিতে, অনেকেই জানতে চাইছেন, এর প্রভাব বাংলাদেশের উপর কেমন হবে? বিশ্ব অর্থনীতির এই অস্থিরতা বাংলাদেশের রপ্তানি, রেমিট্যান্স এবং সামগ্রিক অর্থনীতির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্য যুদ্ধ বাংলাদেশের জন্য একটি উদ্বেগের বিষয়। কারণ, এর ফলে বিশ্ববাজারে পণ্যের দামের পরিবর্তন হতে পারে এবং বাণিজ্যের নতুন সুযোগ তৈরি হতে পারে।
তবে, এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এখনো দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকদের জন্য সতর্ক থাকা এবং পরিস্থিতি ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা জরুরি।
আন্তর্জাতিক অর্থনীতিবিদ এবং বাণিজ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের উচিত হবে এই পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের খাপ খাইয়ে নেওয়া এবং সম্ভাব্য ক্ষতির মোকাবিলায় প্রস্তুতি নেওয়া।
তথ্য সূত্র: সিএনএন