যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধ: ওয়াশিংটনের একটি বিচ্ছিন্ন জনপদ এখন চরম দুর্দশায়। যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যে চলমান বাণিজ্য বিরোধের কারণে ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের একটি ছোট্ট জনপদ, পয়েন্ট রবার্টস-এর জীবনযাত্রা আজ বিপর্যস্ত।
কৌতূহলোদ্দীপক এই জনপদটি কার্যত কানাডার ওপর নির্ভরশীল এবং উভয় দেশের মধ্যেকার বাণিজ্য যুদ্ধের ফলস্বরূপ এখানকার অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। পয়েন্ট রবার্টস, যা যুক্তরাষ্ট্রের মূল ভূখণ্ডের বাইরে অবস্থিত, কানাডার সঙ্গে এর ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কারণে পরিচিত।
এখানকার অধিবাসীরা ব্যবসা-বাণিজ্য, খাদ্য ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য প্রধানত কানাডার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে শুল্ক আরোপের ফলে কানাডিয়ান পর্যটকদের আগমন কমে গেছে, যা স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্যকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে।
এখানকার বাসিন্দারা, যাদের অনেকেই উভয় দেশের নাগরিক, তারা এই পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পয়েন্ট রবার্টসের মেয়র অফিসের মুখপাত্র জানিয়েছেন, স্থানীয় সরকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
তবে, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই সমস্যার সমাধানে তাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে। পয়েন্ট রবার্টসের স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী টামরা হ্যানসেন জানান, তার দুটি রেস্টুরেন্ট প্রায় বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
তিনি বলেন, “কানাডিয়ানদের সমর্থন ছাড়া এই শহরের টিকে থাকা কঠিন।” তার মতো আরও অনেকে মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নীতি এই অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে।
পয়েন্ট রবার্টসের ফায়ার চিফ ক্রিস্টোফার কার্লেটন বলেন, “আমরা একে অপরের প্রতি সহানুভূতিশীল হতে হবে এবং যারা আমাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানে না, তাদের কারণে বর্তমান সম্পর্ক নষ্ট হতে দেওয়া উচিত না।” এই বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে অনেক ব্যবসায়ী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
ল্যারি মুসেলহোয়াইট নামে এক ব্যক্তি, যিনি একটি মদের দোকান চালান, জানান, তার দোকানের বিক্রি গত মাসে ৪০ শতাংশ কমে গেছে। তিনি মনে করেন, বর্তমান প্রেসিডেন্টের নীতির কারণেই এই সংকট তৈরি হয়েছে।
কানাডার সীমান্তবর্তী এই জনপদের মানুষজন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির কারণে সৃষ্ট অস্থিরতার শিকার। তারা চান, দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হোক, যাতে তাদের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক হতে পারে।
পয়েন্ট রবার্টসের বাসিন্দাদের মধ্যে এই বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব অনেক গভীর। তারা চান, দুই দেশের সরকার দ্রুত একটি সমাধানে আসুক, যাতে এই অঞ্চলের মানুষজন তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে পেতে পারে।
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস