ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে তোলপাড়, উদ্বাস্তু হওয়ার ঝুঁকিতে রূপান্তরকামীরা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন পুনরায় ক্ষমতাসীন হওয়ার পর, আবাসন সংক্রান্ত নীতিমালায় পরিবর্তন আনার একটি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মূল লক্ষ্য হল, রূপান্তরকামী (transgender) ব্যক্তিদের অধিকারের সুরক্ষা দুর্বল করা।

এই পরিবর্তনের ফলে, সরকারি সহায়তাপুষ্ট আবাসন প্রকল্পগুলোতে রূপান্তরকামী মানুষেরা বৈষম্যের শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

যুক্তরাষ্ট্রের হাউজিং অ্যান্ড আর্বান ডেভেলপমেন্ট বিভাগ (HUD)-এর নীতি পরিবর্তনের ফলে, রূপান্তরকামীদের আবাসন সংক্রান্ত অভিযোগগুলোর তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। এর ফলস্বরূপ, অনেক রূপান্তরকামী মানুষ হয়রানি ও বৈষম্যের শিকার হয়েও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।

এমন পরিস্থিতিতে, অনেকেই তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।

সেন্ট লুইসের বাসিন্দা, তাজ ওয়েবস্টার নামের একজন রূপান্তরকামী ব্যক্তি, সরকারি সহায়তাপুষ্ট একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকার সময় কর্তৃপক্ষের বৈষম্যমূলক আচরণের শিকার হন। ওয়েবস্টার অভিযোগ করেন, তাকে তার লিঙ্গ পরিচয়ের কারণে নিয়মিত অপমান করা হতো।

এমনকি, তাকে তার অ্যাপার্টমেন্ট থেকে বের করে দেওয়া হয় এবং তার ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও নষ্ট করা হয়। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে তিনি HUD-এর কাছে অভিযোগ জানালেও, ট্রাম্প প্রশাসনের নতুন নীতির কারণে তার মামলাটি খারিজ করে দেওয়া হয়।

আবাসন সংক্রান্ত নীতিমালায় পরিবর্তনের ফলে, রূপান্তরকামী ব্যক্তিদের জন্য নিরাপদ ও স্থায়ী বাসস্থান খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এর ফলে অনেক রূপান্তরকামী মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়ছেন।

শুধু তাই নয়, যারা আশ্রয়কেন্দ্রে থাকছেন, তারাও বৈষম্য ও হয়রানির শিকার হচ্ছেন।

বারাক ওবামার আমলে, “ইকুয়াল অ্যাক্সেস রুল” নামে একটি নীতি চালু করা হয়েছিল। এই নীতির মাধ্যমে, আবাসন এবং আশ্রয়কেন্দ্রে রূপান্তরকামী ব্যক্তিদের প্রতি বৈষম্য নিষিদ্ধ করা হয়েছিল।

কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন এই নীতিটি বাতিল করার উদ্যোগ নিয়েছে। তাদের যুক্তি হলো, লিঙ্গ পরিচয় নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারের ভূমিকা থাকা উচিত নয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের নীতি পরিবর্তন যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকারের ক্ষেত্রে একটি বড় পশ্চাদগমন। এর ফলে, রূপান্তরকামী ব্যক্তিরা তাদের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।

আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবাগুলোতে তাদের প্রবেশাধিকার কঠিন হয়ে পড়বে।

এই পরিবর্তনের ফলে, আশ্রয়কেন্দ্র এবং অন্যান্য সহযোগী সংস্থাগুলোর মধ্যেও দ্বিধা তৈরি হয়েছে। তারা বুঝতে পারছে না, নতুন নীতির সঙ্গে কিভাবে তাদের কার্যক্রম সমন্বয় করবে।

অনেক সংস্থা তাদের ওয়েবসাইটে পরিবর্তন এনেছে, যাতে তারা বিতর্কের বাইরে থাকতে পারে।

ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ, রূপান্তরকামীদের অধিকারের প্রতি একটি বড় আঘাত হিসেবে দেখা হচ্ছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া এবং তাদের অধিকার রক্ষার জন্য লড়াই করা জরুরি।

তথ্যসূত্র: এসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *