ইউক্রেন চুক্তি: ট্রাম্পের জন্য প্রতীকী জয়?

ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র খনিজ চুক্তি: প্রতীকী হলেও ট্রাম্পের জন্য যথেষ্ট

ইউক্রেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সম্প্রতি স্বাক্ষরিত একটি খনিজ চুক্তি আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। যদিও এই চুক্তির তাৎক্ষণিক প্রভাব সীমিত, তবে এর রাজনৈতিক তাৎপর্য অনেক।

মূলত, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ইউক্রেন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা তৈরি এবং ভবিষ্যতে সামরিক সহায়তার পথ সুগম করাই এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য।

জানা যায়, এই চুক্তির ভাবনাটি প্রথম আসে বাইডেন প্রশাসনের আমলে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো করার জন্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অনেকটা বাধ্য হয়েই এটি স্বাক্ষর করেন।

চুক্তিতে এমন কিছু ধারা যুক্ত করা হয়েছে যা উভয় পক্ষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে অন্যতম হলো, রাশিয়ার আগ্রাসনের কারণে ইউক্রেনে যে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তার জন্য সরাসরি রাশিয়াকে দায়ী করা হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ইউক্রেন অস্ত্র কিনলে, তার অর্থ পরিশোধের একটি উপায় তৈরি হবে। ইউক্রেন এই চুক্তির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ ব্যবহার করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনতে পারবে।

বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করা হবে কিনা, তা নিয়ে যখন অনিশ্চয়তা ছিল, তখন এই চুক্তির মাধ্যমে অস্ত্র কেনার পথ খুলে যাওয়াটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।

তবে, এই চুক্তির দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ নিয়ে অনেক প্রশ্ন রয়েছে। কারণ, আগামী কয়েক বছরে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেন উভয় দেশেই রাজনৈতিক পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

নতুন সরকারগুলো এই চুক্তি বহাল রাখবে, নাকি এতে পরিবর্তন আনবে, তা এখনই বলা কঠিন। তাছাড়া, ইউক্রেনের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্কে অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা মনে করেন, দেশটির প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা আনা কঠিন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই চুক্তির প্রধান উদ্দেশ্য হলো, ট্রাম্পকে বোঝানো যে ইউক্রেন থেকে যুক্তরাষ্ট্র কিছু সুবিধা পাচ্ছে। একই সঙ্গে ইউক্রেন দেখাতে চাইছে যে, ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক ভালো হচ্ছে।

ইউক্রেনের মিত্র দেশগুলোও চাইছে, এই চুক্তির মাধ্যমে সামরিক সাহায্য এবং শান্তির আলোচনায় মনোযোগ দেওয়া হোক।

এই চুক্তির মাধ্যমে ট্রাম্প সম্ভবত বুঝতে পারছেন যে, মস্কোর সঙ্গে সম্পর্ক সহজ করার ক্ষেত্রে তিনি তেমন কোনো অগ্রগতি করতে পারছেন না। রাশিয়া এখনো যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেনের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করছে।

চুক্তিতে অস্ত্র ক্রয়ের শর্ত যুক্ত হওয়ায় তা নিঃসন্দেহে ক্রেমলিনের জন্য একটি বার্তা।

সব মিলিয়ে, ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্রের এই খনিজ চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে বড় ধরনের কোনো পরিবর্তন আনবে না। এটিকে মূলত একটি প্রতীকী পদক্ষেপ হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

তবে, এর মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুসংহত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে, যা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *