যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের চাঞ্চল্যকর পদক্ষেপ! ইউক্রেনের সঙ্গে খনিজ চুক্তি?

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু খবর পাওয়া যাচ্ছে, যেখানে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক শক্তি এবং নেতারা শান্তি ফেরানোর চেষ্টা করছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, খুব শীঘ্রই ইউক্রেনের সঙ্গে খনিজ সম্পদ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে।

এই প্রসঙ্গে তিনি আরও জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেনের নেতাদের সঙ্গে তার আলোচনা বেশ ভালোভাবেই এগিয়েছে এবং তিনি দ্রুত যুদ্ধ বন্ধের ব্যাপারে আশাবাদী।

হোয়াইট হাউজ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা ইউক্রেনের খনিজ সম্পদের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ধারণা থেকে সরে এসেছে।

তবে ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ দেশটির পারমাণবিক কেন্দ্রগুলোর মালিকানা ও পরিচালনা করতে পারে।

তবে জেলেনস্কি এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, ইউক্রেনের ১৫টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র তাদের রাষ্ট্রের সম্পত্তি এবং এ নিয়ে কোনো আপস করা হবে না।

এদিকে, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা আগামী সোমবার সৌদি আরবে মিলিত হয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে জ্বালানি কেন্দ্রগুলোতে হামলা বন্ধের বিষয়ে আলোচনা করবেন।

ক্রেমলিনও নিশ্চিত করেছে যে, রুশ কর্মকর্তারাও একই দিনে সৌদি আরবে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নেতারা, হাঙ্গেরির ভিক্টর অরবানের সমর্থন ছাড়া, রাশিয়ার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বিদ্যমান ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে রাজি হয়েছেন।

ব্রাসেলসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে তারা ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। জেলেনস্কি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন।

যদিও ইউক্রেনকে সমর্থন করার বিষয়ে ঐকমত্য দেখা গেছে, তবে জেলেনস্কির অন্তত ৫ বিলিয়ন ইউরোর (প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি) সামরিক সহায়তার আহ্বানে তারা তাৎক্ষণিকভাবে সমর্থন দেননি।

ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট আর্টিলারি গোলাগুলির জন্য এই অর্থ চেয়েছিলেন।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার জানিয়েছেন, শান্তির দিকে তারা সঠিক পদক্ষেপ নিচ্ছেন এবং ব্রিটেন ও ফ্রান্সের নেতৃত্বে একটি ‘ইচ্ছুক জোট’ কার্যক্রম শুরু করেছে।

তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে কোনো শান্তি চুক্তি ভাঙলে ‘গুরুতর পরিণতির’ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তবে তিনি ইউক্রেনে সৈন্য পাঠানোর বিষয়ে আগের দেওয়া প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেননি।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, জোটের নেতারা আগামী সপ্তাহে আবার মিলিত হবেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা চূড়ান্ত করার চেষ্টা করবেন।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, নেক্সট থার্সডে-র বৈঠকে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার বিষয়ে আলোচনা হবে।

সামরিক দিক থেকেও ইউক্রেন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে।

বৃহস্পতিবার ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলায় রাশিয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ সামরিক বিমানঘাঁটিতে বড় ধরনের বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, যা ফ্রন্টলাইন থেকে প্রায় ৭০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।

একই দিনে, রাশিয়া ইউক্রেনের ওডেসার কৃষ্ণসাগর বন্দরে ড্রোন হামলা চালায়, এতে তিনজন আহত হয়েছে এবং একটি বহুতল ভবন ও একটি শপিং মলে ক্ষতি হয়েছে।

রাশিয়ার পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে, ইউক্রেন ইতোমধ্যে জ্বালানি স্থাপনায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘণ করেছে, কারণ তারা রাশিয়ার একটি তেল ডিপোতে হামলা চালিয়েছে।

ক্রাসনোদারের কাছে একটি তেল ডিপোতে ইউক্রেনীয় ড্রোন হামলার কারণে আগুন লেগেছিল।

তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *