ট্রাম্পের শান্তি প্রস্তাবে ইউক্রেনকে হারানোর ভয়! বিস্ফোরক মন্তব্য!

ট্রাম্পের দ্বি-মুখো নীতি: ইউক্রেন যুদ্ধে শান্তির নামে রাশিয়ার প্রতি পক্ষপাতিত্ব?

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে অবস্থান নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম সিএনএন-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে ট্রাম্পের নেওয়া পদক্ষেপগুলো আসলে রাশিয়ার প্রতি বেশি সহানুভূতিশীল।

এমনকি তিনি ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে ছাড় দিতে চাপ দিচ্ছেন।

যুদ্ধ শুরুর পর থেকে কিয়েভের উপর ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। সম্প্রতি কিয়েভে চালানো ভয়াবহ হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া ছিল বেশ দুর্বল। তিনি সরাসরি রাশিয়ার নিন্দা না করে হামলার সময় নিয়ে অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

ট্রাম্পের এই ধরনের মন্তব্য অনেককে হতাশ করেছে। কারণ, একজন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার কাছ থেকে এমন প্রতিক্রয়া কেউ আশা করেনি।

ট্রাম্পের ভাষায়, ‘আমি কারও প্রতি আনুগত্য দেখাই না, আমি জীবন বাঁচাতে চাই।’ তবে বিশ্লেষকরা মনে করেন, ট্রাম্পের এই বক্তব্য যুদ্ধের ভয়াবহতা এবং রাশিয়ার আগ্রাসনের প্রতি তার দৃষ্টিভঙ্গির অসামঞ্জস্যতা প্রকাশ করে।

অন্যদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি ট্রাম্পের কঠোর মনোভাব দেখা গেছে। জেলেনস্কি যখন রাশিয়ার ক্রিমিয়া দখলের স্বীকৃতি দিতে রাজি হননি, তখন ট্রাম্প তার সমালোচনা করেন।

এমনকি তিনি ইউক্রেনকে দীর্ঘ সময় ধরে যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার ফলস্বরূপ দেশটির ক্ষতির সম্ভাবনা সম্পর্কেও মন্তব্য করেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্পের এই দ্বি-মুখো নীতি ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানে কতটা সহায়ক হবে, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। কারণ, তিনি একদিকে যেমন রাশিয়ার প্রতি নমনীয়তা দেখাচ্ছেন, তেমনি ইউক্রেনকে আলোচনার টেবিলে ছাড় দিতে চাপ দিচ্ছেন।

সিএনএন-এর প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ট্রাম্পের এমন অবস্থান রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের প্রতি পক্ষপাতিত্বের ইঙ্গিত দেয়। কারণ, তিনি প্রকাশ্যে রাশিয়ার নিন্দা করা থেকে বিরত থাকছেন।

এমনকি রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে সুবিধা পাইয়ে দিতেও তার আগ্রহ রয়েছে।

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত জন হার্বস্টের মতে, ‘জেলেনস্কি যখন সত্য কথা বলেন, ট্রাম্প তখন তাকে অভিযুক্ত করেন। আর যখন পুতিন ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করেন, তখন তিনি সামান্য তিরস্কার করেন।’

ট্রাম্প অবশ্য জোর দিয়ে বলেছেন, তিনি পুতিনের ওপর যথেষ্ট চাপ সৃষ্টি করছেন। কিন্তু বাস্তবে, রাশিয়াকে আলোচনার টেবিলে আনতে তিনি তেমন কোনো পদক্ষেপ নেননি।

বরং ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ করা বা রাশিয়ার উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপের মতো বিষয়গুলো এড়িয়ে গেছেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্পের এই ধরনের পদক্ষেপ শান্তি আলোচনার নামে রাশিয়াকে আরও বেশি সুবিধা এনে দিতে পারে। ফলে ইউক্রেনকে আরও কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হতে পারে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *