ট্রাম্প প্রশাসনের রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির বিবর্তন
যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প হতাশ হয়েছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এখনো নমনীয়তার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছেন না।
২০২২ সালের এপ্রিল মাসে টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি দ্রুত এই সংঘাতের সমাধান করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তার সেই আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। বরং প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম ১০০ দিনের মধ্যেই তিনি পুতিন এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি—উভয়ের সঙ্গেই তার অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
ফেব্রুয়ারি মাসে ওভাল অফিসে ভাইস প্রেসিডেন্ট ভেন্সের উপস্থিতিতে জেলেনস্কিকে একহাত নিয়ে ট্রাম্প তাকে ‘নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচারী’ বলেছিলেন। আবার এপ্রিল মাসে সেন্ট পিটার্স ব্যাসিলিকায় এক ব্যক্তিগত কথোপকথনে জেলেনস্কির সঙ্গে তার সম্পর্ক ভালো হতে দেখা গেছে। একই সময়ে ট্রাম্প আবার লেখেন, জেলেনস্কির ‘প্রতিটি কথা সমস্যা তৈরি করে’।
পুতিনের সঙ্গে তার ‘খুব ভালো সম্পর্ক’ রয়েছে বলে প্রায়ই ট্রাম্প উল্লেখ করেন। কিন্তু ইউক্রেনে রাশিয়ার অবস্থান পরিবর্তনে শুধু টেলিফোন করা, নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দেওয়া বা রুশ প্রেসিডেন্টকে ‘সম্পূর্ণ পাগল’ বলার চেয়ে বেশি কিছু করার প্রয়োজন হচ্ছে।
আসুন, এই পরিস্থিতির একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র দেখা যাক:
ট্রাম্প প্রশাসনের শুরুর দিকে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দ্রুত বন্ধ করার ব্যাপারে একটা প্রত্যাশা ছিল। ট্রাম্প মনে করেছিলেন, তিনি দ্রুত আলোচনার মাধ্যমে একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানে পৌঁছতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবে তেমনটা হয়নি। যুদ্ধ চলতেই থাকে, যা ট্রাম্পকে হতাশ করে তোলে।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসে। তিনি একদিকে যেমন পুতিনের ওপর চাপ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন, তেমনি জেলেনস্কির সঙ্গে তার সম্পর্কও বিভিন্ন সময়ে ভিন্ন রূপ নিয়েছে। প্রথমে জেলেনস্কিকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করা হলেও, পরে তাদের মধ্যে ব্যক্তিগত আলোচনা হয়েছে। তবে, জেলেনস্কিকে নিয়ে ট্রাম্পের কিছু মন্তব্য থেকে বোঝা যায়, তিনি ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের কিছু পদক্ষেপ নিয়ে সন্দিহান ছিলেন।
মোটকথা, ট্রাম্প প্রশাসনের রাশিয়া-ইউক্রেন বিষয়ক নীতি একটি জটিল পথ অতিক্রম করেছে। দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা থেকে শুরু করে দুই নেতার সঙ্গে সম্পর্কের উত্থান-পতন—সবকিছুই এই নীতির বিবর্তনের অংশ।
তথ্য সূত্র: সিএনএন