মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা কয়েক দশক ধরে গড়ে উঠেছে, সেটি পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে দুর্বল করা থেকে শুরু করে, পুরনো নীতিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন তিনি।
এই পরিবর্তনের ফলে আমেরিকার অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিভিন্ন প্রভাব সৃষ্টি হতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে বিভিন্ন সময়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা ও আইনের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন, ১৭৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ইউএস পোস্টাল সার্ভিস (USPS)।
এই সংস্থাটি আগে তথ্য আদান প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত। এরপর ১৮৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবা (IRS)।
পরবর্তীতে ১৯৩০ সালে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউটস অফ হেলথ (NIH) গঠিত হয়, যা স্বাস্থ্য গবেষণা ক্ষেত্রে সহায়তা করে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়, ১৯৪২ সালে, ভয়েস অফ আমেরিকা (VOA) যাত্রা শুরু করে, যা ছিল বিদেশি প্রচারণার বিরুদ্ধে প্রতিরোধের একটি অংশ।
এছাড়াও, ন্যাটোর (NATO) মতো সামরিক জোট, যা ১৯৪৯ সালে গঠিত হয়েছিল, ট্রাম্পের সময়ে এসে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির সম্মুখীন হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের সময়ে এই সংস্থাগুলোর কার্যকারিতায় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। তিনি ইউএস পোস্টাল সার্ভিসকে বাণিজ্য বিভাগের অধীনে আনতে এবং এর কার্যকারিতা বাড়াতে আগ্রহী ছিলেন।
অভ্যন্তরীণ রাজস্ব পরিষেবার ক্ষেত্রেও করের কাঠামো পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যায়। স্বাস্থ্য ও মানব পরিষেবা বিভাগেও (Department of Health and Human Services) সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে।
এমনকি, জাতিসংঘের উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডি (USAID) এর কর্মপরিধি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের এই পরিবর্তনগুলো কেবল অভ্যন্তরীণ বিষয় নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এর প্রভাব বিস্তারের সম্ভাবনা রয়েছে।
উদাহরণস্বরূপ, ন্যাটোর প্রতি ট্রাম্পের দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণে অন্যান্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আমেরিকার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
এছাড়া, বাণিজ্য নীতি এবং বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি নিয়েও নতুন করে আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
ট্রাম্পের এই নীতি পরিবর্তনের ফলে বিভিন্ন মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।
কেউ কেউ মনে করেন, এর মাধ্যমে সরকারের কার্যকারিতা বাড়বে এবং জনগণের জন্য সুবিধা হবে।
আবার অনেকের মতে, এটি দীর্ঘদিনের প্রতিষ্ঠিত কাঠামোকে দুর্বল করবে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে অস্থিরতা তৈরি করবে।
এই পরিবর্তনের ফলে আমেরিকার রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে কেমন প্রভাব পড়বে, তা এখন দেখার বিষয়।
তথ্যসূত্র: সিএনএন