গ্রীষ্ম শেষ, ট্রাম্পের অবকাশ যাপন নেই!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শ্রমিক দিবস উদযাপনের প্রাক্কালে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কর্মপদ্ধতি নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। আগস্ট মাস জুড়ে যেখানে সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্টরা অবকাশ কাটান, সেখানে ট্রাম্প ছিলেন কর্মব্যস্ত।

সমালোচকরা বলছেন, তিনি ছুটি না কাটানোয় দেশের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে, দেশটির শ্রম বিভাগ আমেরিকান শ্রমিকদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক সাফল্যের বার্ষিক উদযাপন করে। এই উদযাপনের প্রাক্কালে, ট্রাম্প প্রশাসন হাজার হাজার ফেডারেল কর্মীর ইউনিয়ন ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

এর কারণ হিসেবে জাতীয় নিরাপত্তার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও সমালোচকদের মতে, এটি আসলে শ্রমিক সংগঠনগুলোর অধিকার খর্ব করার একটি প্রচেষ্টা। এর আগে মার্চ মাসেও একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, যেখানে পেটেন্ট ও ট্রেডমার্ক অফিস, ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিস, নাসা এবং জলবিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরাও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

ট্রাম্পের ছুটি কাটানোর অনীহা নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন। জুন মাসে, যখন জুনটিন্থ নামে দাসপ্রথা অবসানের একটি নতুন ফেডারেল ছুটি ঘোষণা করা হয়, তখনও তিনি এর বিরোধিতা করেন।

তার মতে, আমেরিকান শ্রমিকদের অনেক বেশি ছুটি দেওয়া হয়, যা দেশের জন্য আর্থিক ক্ষতির কারণ।

হোয়াইট হাউজে বসে ট্রাম্প বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন। তিনি রোজ গার্ডেনকে প্যাটিওতে রূপান্তর এবং প্রায় ২০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি বলরুম নির্মাণের পরিকল্পনা করেছেন।

যদিও অনেকেই মনে করেন, প্রেসিডেন্টের এমন ব্যস্ততা সত্ত্বেও সরকারের কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ এখন টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে।

সাবেক স্বাস্থ্য ও মানব সেবা বিষয়ক মন্ত্রী (HHS Secretary) রবার্ট এফ কেনেডির ভ্যাকসিন বিরোধী অবস্থানের কারণে রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রে (CDC) অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।

পরিচালক সুসান মোনারেজকে ভ্যাকসিন নীতি নিয়ে মতবিরোধের জেরে সরিয়ে দেওয়া হয় এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তা পদত্যাগ করেন।

ফেডারেল রিজার্ভে গভর্নর লিসা কুককে অপসারণের চেষ্টা করা হয়েছে। যদিও তার বিরুদ্ধে কোনো অপরাধের অভিযোগ আনা হয়নি।

পেন্টাগনেও শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে শোনা যাচ্ছে। এছাড়াও, ওয়াশিংটন ডিসিতে ন্যাশনাল গার্ডের সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে, যা সেখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্প প্রশাসনের নেওয়া কিছু পদক্ষেপও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, উপকূলীয় অঞ্চলে বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ বন্ধ করে দেওয়ায় জ্বালানি খরচ বাড়তে পারে এবং হাজার হাজার কর্মীর চাকরি হারানোর সম্ভবনা তৈরি হয়েছে।

ট্রাম্পের সমর্থকরা তার কর্মতৎপরতাকে স্বাগত জানাচ্ছেন।

তবে সমালোচকদের মতে, প্রেসিডেন্টের বিশ্রাম নেওয়া উচিত এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর প্রতি আরও মনোযোগ দেওয়া প্রয়োজন।

তথ্য সূত্র: CNN

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *