ডোনাল্ড ট্রাম্পের উপসাগরীয় দেশগুলোতে সফর: কি পেলেন, আর কি পেলেন না?
সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সৌদি আরব, কাতার এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (সংযুক্ত আরব আমিরাত)-এ সম্প্রতি সফর বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই সফরকালে দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক আরও জোরদার করতে বিভিন্ন বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছে।
বিশেষ করে নিরাপত্তা, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তারা যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পেতে আগ্রহী ছিল।
সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি সুসংহত নিরাপত্তা চুক্তি এবং বিনিয়োগের নিশ্চয়তা চেয়েছিল। অন্যদিকে, কাতার চেয়েছিল কৌশলগত সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চয়তা।
আর সংযুক্ত আরব আমিরাত চেয়েছিল অত্যাধুনিক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তির সুবিধা, বিশেষ করে উন্নত মাইক্রোচিপ পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা তাদের ছিল।
সফরে দেশগুলো কিছু ক্ষেত্রে সফল হলেও, তাদের সব লক্ষ্য পূরণ হয়নি। সৌদি আরব সফরে ট্রাম্পের সঙ্গে বিশাল অঙ্কের চুক্তি হয়েছে, যার মধ্যে ১৪২ বিলিয়ন ডলারের একটি প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্ব চুক্তিও ছিল।
এই সফরে সৌদি আরব ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের অঙ্গীকার করেছে। কাতারের সঙ্গে ৯৬ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি হয়েছে, যেখানে দেশটি ২১০টি বোয়িং বিমান কিনবে।
সংযুক্ত আরব আমিরাতও একটি বিশাল ডেটা সেন্টার কমপ্লেক্স তৈরির জন্য চুক্তি করেছে, যা তাদের এআই সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। যেমন, সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে একটি সুসংহত নিরাপত্তা চুক্তি চেয়েছিল, যা তারা পায়নি।
এছাড়াও, দেশটি তাদের বেসামরিক পারমাণবিক কর্মসূচিতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছিল, কিন্তু সে বিষয়ে কোনো অগ্রগতি হয়নি।
কাতার যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ নিরাপত্তা সহযোগী হিসেবে পরিচিত। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটিটিও কাতারে অবস্থিত।
এই সফরে কাতার যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তা বিষয়ক নিশ্চয়তা লাভ করেছে।
সংযুক্ত আরব আমিরাত ২০৩০ সালের মধ্যে এআই-এর বৈশ্বিক নেতা হতে চায়। এর জন্য তাদের অত্যাধুনিক মার্কিন মাইক্রোচিপ প্রয়োজন।
যদিও তারা এই বিষয়ে কিছু সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে, তবে তাদের চাওয়া অনুযায়ী সবটা এখনো পাওয়া যায়নি।
এই সফরের মাধ্যমে দেশগুলো তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চেয়েছে। বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও নতুন দিগন্ত উন্মোচন হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের এই ধরনের উন্নতি বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি বিশ্ব অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা আনতে সাহায্য করে।
এর ফলে, বাংলাদেশের সঙ্গে উপসাগরীয় দেশগুলোর ব্যবসা-বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
তথ্য সূত্র: সিএনএন