সরকার বন্ধের দ্বারপ্রান্তে যুক্তরাষ্ট্র: ডেমোক্র্যাটদের চ্যালেঞ্জ ট্রাম্পের!

যুক্তরাষ্ট্রের সরকার বন্ধ হয়ে যাওয়ার (Government Shutdown) এক চরম পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আগামী ৩০শে সেপ্টেম্বরের মধ্যে যদি ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টি ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে একটি বাজেট বিষয়ক সমঝোতা না হয়, তাহলে এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ডেমোক্র্যাটদের বিভিন্ন দাবি মানতে রাজি নন, যা এই সংকট আরও ঘনীভূত করছে।

**সংঘাতের মূল কারণসমূহ**

মূলত তিনটি প্রধান ইস্যুতে দুই দলের মধ্যে মতবিরোধ চলছে। প্রথমত, ট্রাম্প প্রশাসন চাচ্ছে, স্বাস্থ্যখাতে রিপাবলিকানদের নেওয়া কিছু নীতি অপরিবর্তিত থাকুক। ডেমোক্র্যাটরা এর বিরোধিতা করছেন এবং স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানোর দাবি জানাচ্ছেন।

দ্বিতীয়ত, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প চাইছেন, কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়াই যেন সরকারের অর্থ কাটছাঁট করার ক্ষমতা তাঁর হাতে থাকে। ডেমোক্র্যাটরা প্রেসিডেন্টের এই ক্ষমতা খর্ব করতে চাচ্ছেন, কারণ তাঁরা মনে করেন, এটি কংগ্রেসের অধিকারের পরিপন্থী।

তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিভিন্ন খাতে প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের বিদেশি সাহায্য কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত। ডেমোক্র্যাটরা এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করছেন।

**দুই দলের অবস্থান**

রিপাবলিকান পার্টি চাইছে, ডেমোক্র্যাটরা যেন তাদের দাবি থেকে সরে আসে। হোয়াইট হাউসের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প তাঁর ক্ষমতা সীমিত করতে রাজি নন।

অন্যদিকে, ডেমোক্র্যাটরা তাঁদের অবস্থানে অনড়। তাঁরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসনকে নমনীয় হতে হবে এবং তাঁদের কিছু দাবি মানতে হবে। ডেমোক্র্যাটদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁরা কোনো ছাড় দিতে রাজি নন। তাঁদের মূল লক্ষ্য হলো, সরকারের স্বাস্থ্যখাত এবং প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা বিষয়ক নীতিগুলোতে পরিবর্তন আনা।

কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্য র’ খান্না বলেছেন, “আমরা আত্মসমর্পন করব না।” তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা দেখেছি, যখন আমরা নতি স্বীকার করেছিলাম, তখন কী হয়েছিল। আমরা আমাদের দলের কর্মীদের ক্ষোভ দেখেছি।”

ডেমোক্র্যাট নেতারা ইতিমধ্যেই তাঁদের দলের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি করতে কাজ করছেন, যাতে তাঁরা সরকারের অর্থ বরাদ্দের সময় রিপাবলিকানদের কাছ থেকে ছাড় আদায় করতে পারেন।

**সম্ভাব্য পরিণতি**

যদি দুই দলের মধ্যে সমঝোতা না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রের সরকার অচল হয়ে যেতে পারে। এর ফলে, অনেক সরকারি কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাবে, এবং সরকারি কর্মচারীদের চাকরি চলে যাওয়ারও সম্ভবনা রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতির উপর মারাত্মক প্রভাব পড়তে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি এখনো অনিশ্চিত। উভয় দলকেই একটি সমঝোতায় আসতে হবে, যাতে এই সংকট এড়ানো যায়। তবে, দুই দলের অনড় অবস্থানের কারণে, অচলাবস্থা তৈরির সম্ভাবনা ক্রমশ বাড়ছে।

তথ্য সূত্র: সিএনএন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *