মার্কিন বিচারকের নির্দেশে ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের কড়া সমালোচনা!

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের হোয়াইট হাউসের বিরুদ্ধে একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন একজন বিচারক। এই রায়ে, সংবাদ সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস’ (এপি)-এর উপর আরোপিত বিধিনিষেধগুলি অবিলম্বে প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মূলত, মেক্সিকো উপসাগরের নামকরণের বিতর্ককে কেন্দ্র করে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল।

ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন ট্রাম্প প্রশাসন মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে ‘গल्फ অফ আমেরিকা’ রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু এপি তাদের সংবাদ প্রতিবেদনে ঐতিহ্যগত নাম, অর্থাৎ ‘মেক্সিকো উপসাগর’ ব্যবহার করতে থাকে।

এর ফলস্বরূপ, হোয়াইট হাউস এপির সাংবাদিকদের রাষ্ট্রপতি সংশ্লিষ্ট কিছু অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণে বাধা দেয়।

বিচারক এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের প্রথম সংশোধনী, যা বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করে, তার লঙ্ঘন হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। বিচারক ট্রাভোর ম্যাকফ্যাডেন, যিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের নিয়োগপ্রাপ্ত, তার রায়ে উল্লেখ করেছেন যে, সরকার যদি কিছু সাংবাদিককে সুযোগ দেয়, তাহলে তাদের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে অন্যদের সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করতে পারে না।

ফেব্রুয়ারি মাসে, এপি এই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে ট্রাম্প প্রশাসনের কয়েকজন শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করে। এপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, তাদের ওপর আরোপিত এই বিধিনিষেধ ছিল সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে তাদের ভাষা ব্যবহারের উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের একটি অপচেষ্টা।

আদালতে ট্রাম্প প্রশাসনের আইনজীবীরা দাবি করেছিলেন যে, হোয়াইট হাউস থেকে রাষ্ট্রপতি বিষয়ক ‘বিশেষ সুযোগ’ পাওয়ার কোনো অধিকার এপির নেই। তবে বিচারক এপির পক্ষে রায় দেন এবং সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতাকে সমুন্নত রাখেন।

এপির নির্বাহী সম্পাদক জুলি পেস এক বিবৃতিতে বলেন, “যে কেউ যদি মনে করেন যে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের এই মামলাটি একটি জলভাগের নামকরণের সঙ্গে সম্পর্কিত, তাহলে তাদের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটটি দেখা উচিত। এটি আসলে সরকার সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে আপনার বক্তব্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে কিনা, সেই বিষয়ে।”

সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা ও মত প্রকাশের অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে এই রায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে যে, কোনো সরকার সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ করতে পারবে না।

তথ্য সূত্র: The Guardian

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *