যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্য সরবরাহে বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে চলেছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতি, বিশেষ করে চীনের থেকে আসা পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের ফলে এই পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে।
এর ফলস্বরূপ, ভোক্তারা দোকানে এবং অনলাইনে আগের চেয়ে অনেক কম পণ্য বৈচিত্র্য দেখতে পাবেন।
আর্টিকেল অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন বিভিন্ন পণ্যের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিল। চীন থেকে আসা পণ্যের ক্ষেত্রে এই শুল্কের পরিমাণ ছিল ১৪৫ শতাংশ পর্যন্ত।
এই সিদ্ধান্তের কারণে জুতা, ব্যাগ, খেলনা এবং অন্যান্য অনেক পণ্যের সরবরাহ কমে যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, খেলনা প্রস্তুতকারক বিখ্যাত কোম্পানি “হাসব্রো” জানিয়েছে, তারা চীনের তৈরি কিছু খেলনা, যেগুলোতে বেশি শুল্ক দিতে হচ্ছে, সেগুলো সরবরাহ বন্ধ করে দেবে।
কারণ, এতে তাদের মুনাফা কমে যাচ্ছিল।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুল্কের কারণে বাজারে পণ্যের অভাব দেখা দিতে পারে। এর ফলে, ক্রেতাদের পছন্দ সীমিত হয়ে আসবে।
অনেক কোম্পানি এরই মধ্যে সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে, তারা কোন পণ্যগুলো সরবরাহ করতে পারবে এবং কোনগুলো পারবে না।
কিছু কোম্পানি চীন থেকে পণ্য আমদানি কমিয়ে দিয়েছে এবং অন্যান্য দেশ থেকে, যেখানে তারা কম দামে পণ্য কিনতে পারছে, সেখান থেকে সরবরাহ নিচ্ছে। এমনকি, অনেক নতুন পণ্য বাজারে আনাও স্থগিত করা হয়েছে।
এই বাণিজ্য নীতির প্রভাব শুধু যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে সীমাবদ্ধ থাকবে না। বিশ্বায়নের যুগে, বিভিন্ন দেশের মধ্যে বাণিজ্যের কারণে একটি গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে।
তাই, এই ধরনের পরিবর্তন বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন দেশের বাজারেও প্রভাব ফেলতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, যদি চীন থেকে খেলনার সরবরাহ কমে যায়, তবে বাংলাদেশের বাজারেও এর প্রভাব পড়তে পারে।
কারণ, অনেক খেলনা চীন থেকে আমদানি করা হয়। ফলে, বাজারে হয়তো খেলনার দাম বাড়তে পারে অথবা কিছু ধরনের খেলনা পাওয়া কঠিন হয়ে যেতে পারে।
বিভিন্ন কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, তাঁরা এখন পণ্যের উৎপাদন এবং সরবরাহ ব্যবস্থাপনায় নতুন করে মনোযোগ দিচ্ছেন। অনেক কোম্পানি তাদের পণ্যের তালিকা ছোট করে দিচ্ছে, যাতে তারা বেশি লাভজনক পণ্যগুলোর ওপর জোর দিতে পারে।
উদাহরণস্বরূপ, “সারা ওয়েলস” নামের একটি কোম্পানি তাদের তৈরি করা বেবি ব্যাকপ্যাকের কয়েকটি রঙ সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে, কারণ অতিরিক্ত শুল্কের কারণে তাদের উৎপাদন খরচ বেড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের বাণিজ্য নীতি উদ্ভাবনী ক্ষমতাকেও ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
কোম্পানিগুলো নতুন পণ্য তৈরি করতে দ্বিধা বোধ করতে পারে, কারণ শুল্কের কারণে তাদের ঝুঁকি বেড়ে যায়। এর ফলে, ভোক্তারা নতুন পণ্য থেকে বঞ্চিত হতে পারেন।
সংক্ষেপে, ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে পণ্যের সরবরাহ এবং বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসতে চলেছে।
এর প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হবে, যা বাংলাদেশের বাজারেও পণ্যের দাম এবং প্রাপ্যতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
তথ্য সূত্র: সিএনএন