ইংল্যান্ড দলের নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থমাস টুখেল খেলোয়াড়দের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং মাঠের পারফরম্যান্সের উন্নতির ওপর জোর দিচ্ছেন। তার প্রধান কৌশল হল খেলোয়াড়দের মধ্যে কঠোর সমালোচনা এবং একে অপরের প্রতি উচ্চ প্রত্যাশা তৈরি করা।
সম্প্রতি, আলবেনিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলে জয়ী হওয়ার পর তিনি তার খেলোয়াড়দের খেলার ধরনে কিছু পরিবর্তন এনেছেন এবং দলের দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করেছেন।
খেলার কৌশলগত দিক নিয়ে টুখেলের গভীর আগ্রহ রয়েছে। তিনি বিভিন্ন ধরনের ফর্মেশন নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন, যেমন ৪-২-৩-১, ৪-১-৪-১ ইত্যাদি।
খেলোয়াড়দের সেরাটা বের করে আনার জন্য তিনি তাদের খেলার ধরন এবং পজিশনের সূক্ষ্ম পরিবর্তনগুলোও বিবেচনা করছেন। মাঝমাঠের নিয়ন্ত্রণ বাড়াতে তিনি কখনো কখনো ‘৩-২’ কৌশল ব্যবহারের কথাও ভাবছেন, যেখানে তিনজন ‘নম্বর টেন’ পজিশনের খেলোয়াড় এবং দুইজন ‘নম্বর সিক্স’ পজিশনে খেলবেন।
তবে এর ফলে দলের গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়, যেমন – মার্কাস রাশফোর্ড এবং বুকায়ো সাকা, তাদের স্বাভাবিক পজিশন থেকে সরে আসতে পারেন।
টুখেল মনে করেন, খেলোয়াড়দের মধ্যে মাঠের বাইরে ভালো সম্পর্ক থাকলেও, মাঠের খেলায় কঠোর হতে হবে। খেলোয়াড়দের একে অপরের দুর্বলতাগুলো ধরিয়ে দিতে এবং ভালো খেলার জন্য চাপ সৃষ্টি করতে উৎসাহিত করছেন তিনি।
ডেক্লান রাইস এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমরা মাঠের বাইরে একে অপরের সঙ্গে খুবই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করি, কিন্তু মাঠের খেলাটা ভিন্ন। এখানে কঠিন আলোচনাগুলো প্রয়োজন, এবং আমরা সেগুলোর জন্য প্রস্তুত।”
কোচ টুখেল তার খেলোয়াড়দের কাছ থেকে নেতৃত্বের গুণাবলী দেখতে চান। হ্যারি কেইন-এর পাশাপাশি তিনি রাইস এবং জুড বেলিংহামের মতো খেলোয়াড়দেরও নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উৎসাহিত করছেন।
খেলোয়াড়দের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং দায়িত্ববোধ তৈরি করার জন্য তিনি তাদের ভূমিকাগুলো পরিষ্কারভাবে ব্যাখ্যা করেন। তিনি চান, খেলোয়াড়রা যেন তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকে এবং দলের সাফল্যের জন্য নিজেদের সেরাটা দেয়।
টুখেলের এই কঠোর মনোভাব খেলোয়াড়দের মধ্যে ভালো পারফরম্যান্সের জন্য প্রয়োজনীয় বলে মনে করা হচ্ছে। তিনি ফিল ফডেন এবং মার্কাস রাশফোর্ডের খেলা নিয়ে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেছিলেন, যাতে তারা আরও দায়িত্বশীল হয় এবং তাদের খেলার উন্নতি হয়।
রাইস মনে করেন, এই ধরনের সমালোচনা খেলোয়াড়দের আরও ভালো খেলতে উৎসাহিত করে এবং বিশ্বকাপ জয়ের জন্য দলের প্রস্তুতিকে আরও শক্তিশালী করে।
তবে, টুখেলের হাতে খুব বেশি সময় নেই। আগামী বছর বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবং তার প্রস্তুতি হিসেবে তিনি এখন থেকেই খেলোয়াড়দের প্রস্তুত করতে চাইছেন।
তার মূল লক্ষ্য হল দলের প্রতিটি খেলোয়াড়কে তাদের সেরাটা দিতে উৎসাহিত করা এবং দলের মধ্যে একটি শক্তিশালী বন্ধন তৈরি করা, যা তাদের বিশ্বকাপ জেতার স্বপ্নকে আরও দৃঢ় করবে।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান