শিরোনাম: অর্থনৈতিক চাপে বিকল্প: তিউনিসিয়ায় খাদ্য হিসেবে শামুকের চাহিদা বাড়ছে
তিউনিসিয়ার অর্থনৈতিক দুর্দশা এবং খাদ্যপণ্যের উচ্চমূল্যের কারণে দেশটির মানুষ এখন আমিষের বিকল্প হিসেবে শামুকের দিকে ঝুঁকছে। দেশটির তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কর্মসংস্থান সংকট তীব্র হওয়ায়, অনেকেই এখন জীবিকা নির্বাহের জন্য শামুক সংগ্রহ ও বিক্রির ব্যবসায় নামছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, দেশটির বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম আকাশছোঁয়া, যা অনেক পরিবারের নাগালের বাইরে। এমন পরিস্থিতিতে, প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে শামুক একটি নির্ভরযোগ্য বিকল্প হিসেবে উঠে এসেছে।
আকোদা গ্রামের ২৯ বছর বয়সী শামুক বিক্রেতা করিম জানান, “শামুক লাভজনক, উপকারী এবং এর চাহিদা বেশ ভালো।” তিউনিসিয়ার মানুষ হাজার বছর ধরে শামুক খেয়ে আসছে।
বর্তমানে, এটি আবার জনপ্রিয়তা লাভ করছে, বিশেষ করে গরিব ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর কাছে।
শামুক একদিকে যেমন পুষ্টিগুণে ভরপুর, তেমনি অর্থনৈতিক দিক থেকেও সাশ্রয়ী। এতে কম ফ্যাট এবং প্রচুর পরিমাণে আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে।
বাজারে গরুর মাংসের তুলনায় শামুকের দাম প্রায় অর্ধেক। উদাহরণস্বরূপ, এক কেজি গরুর মাংসের দাম যেখানে প্রায় ৫,৬০০ টাকার বেশি, সেখানে এক বাটি শামুক পাওয়া যায় প্রায় ১৫০ টাকার আশেপাশে।
স্থানীয় বাজারের একজন ক্রেতা মোহাম্মদ জানান, “ভেড়ার মাংসের চেয়ে শামুক রান্না করা সহজ। যদি এক কেজি ভেড়ার মাংস ৫,০০০ টাকায় কিনতে হয়, তবে এক বাটি শামুক পাওয়া যায় মাত্র ১৫০ টাকায়।”
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাংস ও পোল্ট্রির দাম ক্রমাগত বাড়তে থাকায়, তিউনিসিয়ার মানুষ এখন আমিষের বিকল্প হিসেবে সাশ্রয়ী খাবারের দিকে ঝুঁকছে।
শুধু অর্থনৈতিক দিক থেকেই নয়, পরিবেশগত দিক থেকেও শামুক একটি ভালো বিকল্প। কারণ, এটি কার্বন নিঃসরণ কমায় এবং গবাদি পশু পালনের কারণে বনভূমি ধ্বংসের ঝুঁকিও কমায়।
তিউনিজের একটি রেস্তোরাঁর মালিক ওয়াহিবা ড্রিদি জানান, তিনি ঐতিহ্যবাহী উপায়ে মরিচ ও মশলা দিয়ে শামুক রান্না করেন। রমজান মাসেও এর বেশ চাহিদা ছিল।
সাধারণত, তিউনিসিয়ার মুসলমানরা রমজানে মাংস খেয়ে থাকেন। তবে এক কেজি গরুর মাংসের দাম যেখানে প্রায় ৯,০০০ টাকার মতো, সেখানে এক কেজি শামুক পাওয়া যায় প্রায় ২,৫০০ টাকায়।
ওয়াহিবা ড্রিদি আরও বলেন, “যদি মানুষ শামুকের উপকারিতা সম্পর্কে জানত, তবে তারা সারা বছর এটি খেত।”
তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস