ইমামোগ্লুর: হঠাৎ করে বাতিল হলো মেয়রের ডিগ্রীর সনদ!

তুরস্কের বৃহত্তম শহর ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগ্লুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ বাতিল করেছে দেশটির একটি বিশ্ববিদ্যালয়। কর্তৃপক্ষের দাবি, ১৯৯০ সালে তিনি এবং আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী নিয়ম ভেঙে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছিলেন।

এই সিদ্ধান্তের ফলে ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইমামোগ্লুর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সম্ভাবনা হুমকির মুখে পড়েছে।

ইস্তাম্বুল বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, ১৯৯০ সালে ম্যানেজমেন্ট অনুষদের ইংরেজি বিভাগে ভর্তির ক্ষেত্রে অনিয়ম ধরা পরে। ওই বছর ৩৮ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

এর মধ্যে ১০ জনের ভর্তি বাতিল করা হয়েছে এবং মেয়র ইমামোগ্লুসহ ২৮ জনের সনদ বাতিল করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দাবি, ভর্তির সময় ‘গুরুতর ত্রুটি’ ছিল।

মেয়র ইমামোগ্লু এই সিদ্ধান্তকে ‘অবৈধ’ আখ্যা দিয়ে এর বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো অধিকার নেই।

এই ক্ষমতা কেবল বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অনুষদের পরিচালনা পর্ষদের।” তিনি আরও বলেন, “যারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাদের জবাবদিহিতার দিন খুব বেশি দূরে নেই।

ন্যায়বিচার, আইন ও গণতন্ত্রের জন্য আমাদের দেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা, তা কোনোভাবেই থামানো যাবে না।

ইমামোগ্লুর দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির সংসদ সদস্য মুরাত এমির এই সিদ্ধান্তকে গণতন্ত্রের ওপর ‘মারাত্মক আঘাত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

বিরোধী দল গুড পার্টির চেয়ারম্যান মুসাভাত দেভরিওগ্লু বলেছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ‘নিশ্চিহ্ন’ করার জন্যই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আসন্ন নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের বিরুদ্ধে ইমামোগ্লুর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্ভাবনা ছিল।

কিন্তু সনদ বাতিলের এই সিদ্ধান্তের ফলে সেই সম্ভাবনা কমে যেতে পারে। তুরস্কের সংবিধান অনুযায়ী, প্রেসিডেন্ট পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হলে উচ্চ শিক্ষার ডিগ্রি থাকতে হয়।

ইমামোগ্লু বর্তমানে ইস্তাম্বুলের মেয়র হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব পালন করছেন।

এর আগে, ২০১৮ সালে তুরস্কের নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ‘অসম্মান’ করার দায়ে তার ২ বছর ৭ মাসের কারাদণ্ড হয়েছিল এবং রাজনীতিতে অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল, যা তিনি আপিল করেছেন।

তথ্য সূত্র: আল জাজিরা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *