আতঙ্ক! তুরস্কের ৩ মেয়র গ্রেপ্তার, বিরোধী শিবিরে হুলুস্থুল!

তুরস্কে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর দমন অভিযান জোরদার হচ্ছে, যার ফলস্বরূপ দেশটির দক্ষিণাঞ্চলের তিনটি প্রধান শহরের মেয়রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম এ খবর জানিয়েছে।

জানা গেছে, আটককৃতদের মধ্যে রয়েছেন আদিয়ামান শহরের মেয়র আব্দুর রহমান তুতদেরে, আদানা পৌরসভার প্রধান জেইদান কারালার এবং আন্তালিয়ার মেয়র মুহিতিন বোসেক।

আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, ভোরে অভিযান চালিয়ে আদিয়ামানের মেয়র আব্দুর রহমান তুতদেরে এবং আদানা পৌরসভার মেয়র জেইদান কারালারকে আটক করা হয়। তারা উভয়েই তুরস্কের প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) সদস্য।

একইসাথে, আন্তালিয়ার মেয়র মুহিতিন বোসেককে ঘুষের অভিযোগে আরও দুই সন্দেহভাজনের সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে। আন্তালিয়া চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের তত্ত্বাবধানে এই অভিযান চালানো হয়।

আটকের পর তুতদেরেকে রাজধানী আঙ্কারা থেকে ইস্তাম্বুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ইস্তাম্বুল চিফ পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের তদন্তে কারালার ও তুতদেরেসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তাদের বিরুদ্ধে সংগঠিত অপরাধ, ঘুষ ও দরপত্র জালিয়াতির অভিযোগ আনা হয়েছে। তবে, তাদের বিরুদ্ধে ঠিক কী অভিযোগ আনা হয়েছে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনো প্রকাশ করা হয়নি।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে সিএইচপি নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন পৌরসভার কর্মকর্তাদের গ্রেপ্তারের ঘটনা বেড়েছে। এর আগে, ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগ্লুকে দুর্নীতির অভিযোগে কারারুদ্ধ করা হয়।

তাকে প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে মনে করা হয়।

গত সপ্তাহে তুরস্কের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইজমিরের সাবেক মেয়র তুন সোয়ের এবং ১৩৭ জন পৌর কর্মকর্তাকে দরপত্র জালিয়াতি ও দুর্নীতির অভিযোগে আটক করা হয়। পরে, সাবেক মেয়র তুন সোয়েরসহ ৫৯ জনকে বিচারের জন্য কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোয়েরের আইনজীবী এই সিদ্ধান্তকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলে অভিহিত করেছেন।

এছাড়াও, আন্তালিয়া প্রদেশের একটি ভূমধ্যসাগরীয় রিসোর্ট শহর মানাভাতের সিএইচপি মেয়র এবং আরও ৩৪ জনকে দুর্নীতির অভিযোগে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিরোধী দল সিএইচপির অভিযোগ, তাদের দলটিকে দুর্বল করার জন্য এই ধরনের গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হচ্ছে। যদিও তুরস্ক সরকার বলছে, প্রসিকিউটর ও বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে কাজ করছে।

তবে, ইস্তাম্বুলের মেয়র ইমামোগ্লুকে গ্রেপ্তারের পর তুরস্কে গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ দেখা গেছে। ইমামোগ্লুকে তার দলের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবেও মনোনীত করা হয়েছে।

২০২৩ সালের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত আদিয়ামান শহরসহ বেশ কয়েকটি শহর, যা আগে এরদোগানের দলের শক্ত ঘাঁটি ছিল, স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী দলের কাছে হেরে যায়। তুরস্কে ২০২৮ সালে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, তবে পরিস্থিতি বিবেচনায় তা আরও আগে হতে পারে।

তথ্য সূত্র: অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *