তুরস্কে কারাবন্দী ইস্তাম্বুলের মেয়রের সমর্থনে বিশাল বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে বিরোধী দল। দেশটির প্রধান বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-র ডাকে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
দলটির দাবি, এতে প্রায় ২২ লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিল। আটক হওয়া মেয়র একরাম ইমামোগলুর মুক্তি এবং তার বিরুদ্ধে আনা দুর্নীতির অভিযোগের প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
ইস্তাম্বুলের মেয়রকে দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে অভিযুক্ত করে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী দল এই অভিযোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করে।
তাদের মতে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের সরকার আসন্ন নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমন করতে চাইছে।
সমাবেশে পুলিশের দমননীতিরও তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস, জলকামান ও পিপার স্প্রে ব্যবহার করা হয়।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ পুলিশের এই পদক্ষেপকে ‘অপ্রয়োজনীয় ও বেআইনি’ হিসেবে বর্ণনা করেছে। বিক্ষোভের জেরে এরই মধ্যে ১ হাজার ৯০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে ১৩ জন সাংবাদিকও রয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া সাংবাদিকদের মধ্যে ১০ জন ছিলেন ফটো সাংবাদিক।
বিক্ষোভের ছবি তোলার কারণে তাদের আটক করা হয়। পরে অবশ্য তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
তুরস্কের বিচারমন্ত্রী সাংবাদিকদের স্বাধীনতা নিয়ে কথা বললেও, বিবিসির একজন সাংবাদিককে দেশ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া, বিক্ষোভের খবর সংগ্রহ করতে আসা একজন সুইডিশ সাংবাদিককেও গ্রেপ্তার করা হয়।
ইমামোগলুর আইনজীবীসহ আরও কয়েকজন সাংবাদিককে আটক করা হয়েছে।
সিএইচপি’র নেতারা বলেছেন, তারা এখন থেকে তুরস্কের বিভিন্ন শহরে প্রতি সপ্তাহে বিক্ষোভ সমাবেশ করবেন। এছাড়া, তারা প্রতি বুধবার ইস্তাম্বুলে একই ধরনের কর্মসূচি পালন করবেন।
বিরোধী দলের নেতারা জানান, প্রয়োজনে তারা কারাবন্দী হতেও রাজি আছেন। তাদের মতে, এই ‘ষড়যন্ত্র’ রুখতে না পারলে তুরস্কের গণতন্ত্র ধ্বংস হয়ে যাবে।
কারাবন্দী মেয়র একরাম ইমামোগলু তার মুক্তির দাবিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি ইউরোপীয় নেতাদের তার সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মেয়র ইমামোগলু জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছেন এবং আসন্ন নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে তাকে দেখা হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে তাকে কারারুদ্ধ করার ঘটনাকে অনেকেই গভীর উদ্বেগের সঙ্গে দেখছেন।
তথ্য সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান