তুরস্কে রাষ্ট্রপতি এরদোগানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে আটকের প্রতিবাদে ব্যাপক সংঘর্ষ
তুরস্কে, রাষ্ট্রপতি রেচেপ তাইয়েপ এরদোগানের প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ, ইস্তাম্বুলের মেয়র একরেম ইমামোগলুকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে দেশজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভকারীরা মেয়র ইমামোগলুর মুক্তির দাবিতে রাস্তায় নেমে আসে এবং নিরাপত্তা বাহিনীর সাথে তাদের সংঘর্ষ হয়।
বিভিন্ন সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারা এবং ইস্তাম্বুলে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস ও জলকামান ব্যবহার করেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আসা ভিডিওগুলোতেও এর প্রমাণ মিলেছে।
ইমামোগলুকে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসবাদের অভিযোগে বুধবার আটক করা হয়। তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির খবরে বলা হয়েছে, মেয়রের সাথে জড়িত প্রায় ১০০ জনের বিরুদ্ধেও গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে, যাদের মধ্যে তার প্রেস উপদেষ্টা মুরাত ওংগুনও রয়েছেন।
গত বৃহস্পতিবার বিক্ষোভকারীদের সাথে পুলিশের সংঘর্ষে অন্তত ১৬ জন পুলিশ আহত হয়েছে এবং ৫৩ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে বিক্ষোভকারীদের হতাহতের সংখ্যা এখনো স্পষ্ট নয়।
বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি (সিএইচপি)-র নেতা ওজগুর ওজেল বৃহস্পতিবার এক সমাবেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, “যখন আমাদের নির্বাচিত প্রতিনিধিকে বন্দী করে রাখা হয়েছে, তখন আমরা ঘরে বসে থাকতে পারি না। এখন থেকে আমরা রাস্তায় থাকব। তারা আমাকে জিজ্ঞাসা করছে, আমি কি মানুষকে রাস্তায় নামতে বলছি? হ্যাঁ, হ্যাঁ, অবশ্যই!”
অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট এরদোগান বিক্ষোভকারীদের এই আন্দোলনকে ‘নাটক’ এবং ‘স্লোগান’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, তুরস্কের হাতে এসবের জন্য সময় নেই।
শুক্রবারও, ইস্তাম্বুলের পৌর ভবনের বাইরে কয়েক হাজার মানুষ জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখায়। শহরের বাইরে চার দিনের জন্য সভা-সমাবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলেও, তারা তা উপেক্ষা করে তুরস্কের পতাকা হাতে নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আঙ্কারা ও ইজমিরেও ছাত্র বিক্ষোভ হয়েছে, যেখানে একই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর রয়েছে।
ইমামোগলু ২০১৯ ও ২০২৪ সালে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। যদিও ২০২৮ সালে পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কথা রয়েছে, তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এরদোগান মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই আগাম নির্বাচনের ঘোষণা করতে পারেন।
তথ্য সূত্র: সিএনএন