ছেলের পরদিনই মেয়ের স্নাতক! দুই রাজ্যে ছুট, বাবা-মায়ের চোখে জল!

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক দম্পতি, রক্সান ও কেন ফিল্ড, তাঁদের যমজ সন্তানের একসঙ্গে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এক অভূতপূর্ব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলেন। ঘটনাটি ছিল এমনই যে, সন্তানদের একটির সমাবর্তন ছিল অ্যারিজোনায়, এবং অন্যটির ওয়াশিংটনে।

দুটি অনুষ্ঠানের মধ্যে সময়ের ব্যবধান ছিল মাত্র ১৫ ঘণ্টা।

সন্তানদের পড়াশোনার পাট চুকিয়ে ডিগ্রি লাভের দিনে বাবা-মা হিসেবে তাঁদের পাশে থাকতে, রক্সান ও কেন এক কঠিন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেন।

তাঁদের ছেলে জ্যাক নর্দার্ন অ্যারিজোনা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এবং মেয়ে অড্রে গঞ্জাগা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক হন। সময়টা ছিল অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি, যখন তাঁরা জানতে পারেন, জ্যাকের সমাবর্তন শুরু হবে শনিবার বিকেল ৩টায়, আর অড্রের পরের দিন রবিবার সকাল ৯টায়।

এই পরিস্থিতিতে, রক্সান ও কেন সিদ্ধান্ত নেন, তাঁরা দুজনেই দুই সন্তানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

পরিকল্পনামাফিক, তাঁরা প্রথমে জ্যাকের সমাবর্তনে যোগ দিতে ক্যালিফোর্নিয়া থেকে অ্যারিজোনার ফ্ল্যাগস্টাফে যান। সেখান থেকে তাঁদের রওনা দিতে হতো ওয়াশিংটনের স্পোকেনের উদ্দেশে।

কিন্তু দ্রুত সময়ে সেখানে পৌঁছানো ছিল অত্যন্ত কঠিন। কারণ, ফ্ল্যাগস্টাফ থেকে স্পোকেনের সরাসরি কোনো ফ্লাইট ছিল না। কাছাকাছি সময়ের ফ্লাইট ধরার জন্য তাঁদের ফিনিক্স হয়ে যেতে হতো। এরপর ভাড়া করা গাড়িতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে স্পোকেনে পৌঁছানো ছাড়া তাঁদের আর কোনো উপায় ছিল না।

যাত্রাপথে ছিল নানা বাধা। এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে যানজটের কারণে তাঁদের গাড়ি আটকে ছিল।

সৌভাগ্যবশত, দ্রুতই সেই জট কাটে, এবং তাঁরা সময়মতো ফিনিক্স বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে গাড়ি ফেরত দিয়ে বিমানবন্দরের ট্রামে চড়ে নিরাপত্তা অঞ্চলের দিকে যান। বিমানবন্দরের নিরাপত্তা লাইনে তেমন ভিড় ছিল না, ফলে তাঁরা দ্রুতই সবকিছু সম্পন্ন করতে সক্ষম হন।

রাতভর জার্নি শেষে তাঁরা যখন স্পোকেনে পৌঁছান, তখন ঘড়িতে ভোর ৫টা। চরম ক্লান্তিতেও রক্সান জেগে ছিলেন, আর তাঁর স্বামী কিছুক্ষণ বিশ্রাম নেওয়ার সুযোগ পান।

অবশেষে, সকাল ৯টায় অড্রের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁরা স্পোকেন অ্যারেনায় পৌঁছান। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন রক্সানের বাবা-মাও, যাঁরা অ্যারিজোনা থেকে এসেছিলেন।

রক্সান জানান, সন্তানদের এই সাফল্যে তাঁরা গর্বিত।

জ্যাক শিক্ষা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন এবং তাঁর শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন। অন্যদিকে, অড্রে গণিতে স্নাতক হয়ে ভবিষ্যতে অ্যাকচুয়ারি পেশায় যোগ দিতে চান।

সন্তানদের পড়াশোনার গুরুত্ব এবং বাবা-মায়ের এই ত্যাগের বিষয়টি বাংলাদেশের সংস্কৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

আমাদের দেশেও, সন্তানের শিক্ষা জীবনের প্রতিটি ধাপে অভিভাবকেরা তাঁদের সমর্থন ও সহযোগিতা দিয়ে থাকেন।

তথ্যসূত্র: পিপল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *