মদ ও বন্ধুত্বের গল্প: ‘টু পিন্টস’ নিয়ে আলোড়ন!

আয়ারল্যান্ডের প্রখ্যাত লেখক রডি ডয়েলের নতুন নাটক ‘টু পিন্টস’ – জীবনের নানা দিক নিয়ে হাস্যরসের এক অসাধারণ উপস্থাপনা। ব্রিটেনের একটি থিয়েটারে সম্প্রতি এর প্রদর্শনী হয়েছে, যেখানে দুই বন্ধুর গল্প বলা হয়েছে যারা একটি পাব-এ বসে তাদের জীবনের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করে।

এই নাটকের মূল বিষয়বস্তু হল – জীবন, মৃত্যু, পরিবার এবং ক্যাথলিক চার্চের মতো গভীর বিষয়গুলো হালকা মেজাজে তুলে ধরা।

নাটকটি মূলত ডয়েলের লেখা কয়েকটি উপন্যাস এবং অনলাইন কথোপকথন থেকে অনুপ্রাণিত। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে প্রকাশিত ‘টু পিন্টস’, ‘টু মোর পিন্টস’, এবং ‘টু ফর দ্য রোড’ – এই তিনটি উপন্যাসে দুই মধ্যবয়স্ক আইরিশ পুরুষের মধ্যে গিনেস পান করে কাটানো কথোপকথনগুলো তুলে ধরা হয়েছে।

এমনকি লকডাউনের সময়, ডয়েল ‘দ্য জুম পিন্টস’ নামে আরও কিছু অনলাইন কথোপকথন যুক্ত করেন, যেখানে তারা নিজেদের বাড়িতে বসে কথা বলতেন।

নাটকের মঞ্চায়ন দেখলে মনে হয় যেন একটি আসল আইরিশ পাব-এর প্রতিরূপ তৈরি করা হয়েছে। পাবের পরিবেশ, পানীয়ের গ্লাস এবং হালকা স্ন্যাকসের আয়োজন দর্শকদের অন্যরকম অনুভূতি দেয়।

মঞ্চে ‘ওয়ান’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন অ্যান্টনি ব্রফি, যিনি একজন অসুস্থ বাবার দেখাশোনা করার পর কিছুটা হতাশ হয়ে পাব-এ আসেন।

অন্যদিকে, ‘টু’ চরিত্রে শন কার্নস-এর অভিনয় বেশ আকর্ষণীয়। তাদের কথোপকথনগুলো অনেক সময় হালকা চালে শুরু হলেও, ধীরে ধীরে তা জীবন ও মৃত্যুর মতো গভীর বিষয়গুলোতে প্রবেশ করে।

নাটকের গল্পে তারা টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তাদের পছন্দের নারী চরিত্রদের নিয়ে আলোচনা করে। এছাড়া, তারা বিভিন্ন কাল্পনিক টিভি সিরিজ নিয়ে আলোচনা করে, যেমন ‘সেলিব্রিটি কার পার্ক অ্যাটেনডেন্ট’। এই ধরনের হাস্যরস দর্শকদের বিশেষভাবে আকৃষ্ট করে।

এছাড়াও, ফুটবল নিয়েও তাদের মধ্যে চলে নানা আলোচনা।

সমালোচকদের মতে, এই নাটকটি রডি ডয়েলের কমেডি লেখার দক্ষতার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তিনি যেভাবে সংলাপ তৈরি করেছেন এবং অভিনেতারা যেভাবে তাদের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন, তা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

নাটকের বিষয়বস্তু হয়তো আয়ারল্যান্ডের প্রেক্ষাপটে তৈরি, কিন্তু এর মধ্যে জীবনের যে গল্পগুলো আছে, তা সবার কাছেই পরিচিত এবং আকর্ষণীয়। বিশেষ করে, পরিবার, বন্ধু এবং জীবনের নানা উত্থান-পতন নিয়ে আলোচনাগুলো দর্শকদের গভীরভাবে নাড়া দেয়।

বর্তমানে, এই নাটকটি ব্রিটেনের বেলগ্রেড থিয়েটারে প্রদর্শিত হচ্ছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *